প্রচণ্ড শব্দে একের পর এক গাড়ি বিস্ফোরণ। তাতে কেঁপে উঠল ভারতের রাজধানী দিল্লির বিশাল এলাকা। দিল্লির লাল কেল্লার কাছে মেট্রো পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণে অন্তত ১০ জন নিহতের খবর রয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
দিল্লি প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। আহত অনেককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে; যার মধ্যে কারো কারো অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এত বড় গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দিল্লিতে। ভারতীয় প্রশাসন মনে করছে, কোনো উগ্রবাদী সংগঠন এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এরই মধ্যে হাই সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারি হয়েছে দিল্লিজুড়ে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির ঘটনাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে দিল্লির লালবাগ কেল্লার কাছে বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছের একটি গাড়িতে প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটে। পাশাপাশি থাকা গাড়িগুলোতেও আগুন লেগে যায় এবং সেগুলো বাজির মতো ফুটতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশের বাড়ি ও দোকানপাটের জানালার কাঁচ ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়েছে, তীব্রতায় ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠে। আতঙ্কিত মানুষদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যেতে দেখা যায়।
দিল্লির লাল কেল্লায় এসে ঘটনা সম্পর্কে ব্রিফ করেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার সতীশ গোলচা। তিনি হতাহতের বিষয়ে তথ্য দেন। তাৎক্ষণিক হাই সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারির বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হাই সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারি করে। এ ছাড়া দিল্লির সব বাস, মেট্রো ও রেল স্টেশনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া স্টেশন ও হাওড়া ব্রিজ চত্বরে। আরপিএ পয়েন্টে পয়েন্টে তল্লাশি চালাচ্ছে। এমনকি স্টেশন চত্বরে প্রবেশের মুখে সব গাড়ি স্নাইপার ডগ দিয়ে বিশেষভাবে পরীক্ষার পর ছাড়া হচ্ছে। স্টেশনজুড়ো নিরাপত্তাকর্মীদের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে। একই সঙ্গে স্টেশনে সব ট্রেনে চালানো হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা পরীক্ষা।
এদিকে, দিল্রিতে বিস্ফোরণের ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই দিল্লির অদূরে ফরিদাবাদ থেকে ৩৬০ কিলোগ্রামের বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করে পুলিশ। কাশ্মীরে ধরা পড়া এক চিকিৎসককে জেরা করে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের হদিস পাওয়া যায়।