জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর আমদানি নিষিদ্ধ ৩৯ মেট্রিক টন ঘনচিনি (সোডিয়াম সাইক্লেমেট) আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
সোমবার (১০ নভেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন ও রিসার্চ (এ আই আর) টিম পণ্যগুলো খালাসের শেষ মুহূর্তে চালানটি আটক করে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, আটক করা ঘনচিনি চালানের তথ্য পর্যালোচনায় জানা যায়, রাজধানীর মিটফোর্ড, বংশালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস.পি. ট্রেডার্স গত ৪ অক্টোবর পলিঅ্যালোমিনিয়াম ক্লোরাইড ঘোষণায় চীন থেকে তিনটি কন্টেইনারে ৬৩ মেট্রিক টন পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করে।
চালানটি খালাসের জন্য আমদানিকারকের পক্ষে চট্টগ্রাম জুবিলী রোডের সি বার্ড কর্পোরেশন বিল অব এন্ট্রি (নং ১৮২৮২৭৮) গত ৭ অক্টোবর দাখিল করে। পণ্য চালানটি খালাসের জন্য ট্রাকে লোড করার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস উক্ত পণ্যের খালাস স্থগিত করা হয়।
একইসঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কায়িক পরীক্ষা করা হয় এবং পরীক্ষাকালে দুই ধরনের পণ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এসব পণ্যের নমুনা উত্তোলন করে কাস্টমস হাউস চট্টগ্রামের ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে আলোচ্য দুই শ্রেণির পণ্যের মধ্যে একটিতে ২৪ মেট্রিক টন পলিঅ্যালোমিনিয়াম ক্লোরাইড পাওয়া গেলেও বাকি ৩৯ মেট্রিক টন পণ্যকে ঘনচিনি (সোডিয়াম সাইক্লেমেট) নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাজস্ব বোর্ড জানায়, ঘনচিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক, যা সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কনডেন্সড মিল্ক এবং শিশু খাদ্য তৈরিতে সাধারণ চিনির পরিবর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ক্ষতিকারক কৃত্রিম উপাদানটি ব্যবহার করে থাকে।
ঘনচিনি দিয়ে তৈরি খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘনচিনির দ্বারা প্রস্তুত খাদ্য ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর বিধায় সরকার আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুসারে পণ্যটিকে আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে, নিষিদ্ধ ঘনচিনি আমদানি করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর বিধান মোতাবেক পণ্যচালানটি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস আটক করেছে। একইসঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন।