জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, “যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না হয় এবং নির্বাচন যদি পিছিয়ে যায়, তাহলে আপনারা দুই দল (বিএনপি ও জামায়াত) নির্বাচন পেছানোর জন্য দায়ী থাকবেন। দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের একটি পদ্ধতি বের করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদে শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক অবমূল্যায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে একটি ‘সংস্কার জোট’ হবে। কেউ সমাজকল্যাণ করে যেসব ভোট বাড়িয়েছেন, কেউ শহীদ পরিবার থেকে ‘পলিটিক্যাল ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর’ যোগ করে, সামনে এই দুইটা দলের ভোট ব্যাংক নিচের দিকে নামবে। আগামীতে ভোট পাবে কারা? আগামী নির্বাচনের আগে একটি সংস্কার জোট হবে। সংস্কার জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।”
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের বুকে দাঁড়িপাল্লার ব্যাজ থাকুক বা ধানের শীষের ব্যাজ থাকুক, বুঝে গিয়ে সংস্কার জোটে ভোট দিয়ে আসবেন। ইতোমধ্যে সমঝোতার ডেডলাইন শেষ। দুটি দল থেকে মাঠে মারামারি, তর্কযুদ্ধ দেখলাম, কোনো সমাধান দেখলাম না।”
তিনি আরো বলেন, “সরকার যদি ঐক্যমত্য কমিশনের ভাষ্য থেকে বের হয়ে বিএনপি বা জামায়াতের পক্ষে কোনো বক্তব্য দেয়, তাহলে কিন্তু আমরা শহীদ ও আহত পরিবারসহ সবাইকে নিয়ে আবার রাজপথে আবার যাব। দুইটি দলকে কীভাবে বাধ্য করতে হয়, তা আমরা জানি।”
এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, “বামপন্থি দলগুলো লাল পতাকার রাজনীতির নামে এ দেশের মানুষের সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে প্রতারণা করে আসছে। শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির বদলে বামপন্থি রাজনীতিকে নিছক ভোট ব্যাংক গঠন ও আসন লাভের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।”
মুখ্য সমন্বয়ক আরো বলেন, “লাল পতাকা যে শুধুই দলের ভোগের হাতিয়ারে পরিণত হবে, তা আমরা দেখতে চাই না। আপনারা বিপ্লবের ইতিহাস মুখস্থ করে সামান্য আসন বা ক্ষমতার বিনিময়ে সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিক্রি করবেন না।”
তিনি বলেন, “একাত্তরের পর যারা সমতা, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়েছিলেন, সেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আদর্শের পাশে থাকাই কর্তব্য। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় নতুন নতুন অন্যায় ও প্রতারণা আবির্ভূত হয়েছে।”
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম-আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, শ্রমিক সংহতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা আক্তার প্রমুখ।