সারা বাংলা

বিরামপুর রেলস্টেশনে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ নারীর সন্তান প্রসব

দিনাজপুরের বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন।

সোমবার (১০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও শিশু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিরামপুর রেলস্টেশন মাস্টার কাজী ফয়েজ আলাউদ্দীন বলেন, “গতকাল রাতে স্টেশনে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বাচ্চা এবং মা দুজনেই ভালো আছেন। তারা বর্তমান হাসপাতালে ভর্তি আছেন।”

স্থানীয় বাসিন্দা মরিয়ম বেগম জানান, গত তিন-চার মাস ধরে গর্ভবতী ওই নারীকে স্টেশনের প্লাটফর্মেই ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিল। তিনি কারো সঙ্গে বেশি কথা বলতেন না এবং কারো কাছে কিছু চাইতেনও না। কেউ স্বেচ্ছায় খাবার দিলে তবেই খেতেন। তিনি একেবারে নিঃসঙ্গ অবস্থায় স্টেশনের প্লাটফর্মে বসবাস করছিলেন।

তিনি বলেন, “সোমবার রাতে সন্তান প্রসবের সময় আমরা আশপাশের বাড়ির কয়েকজন নারী মানবিক বিবেচনায় এগিয়ে আসি। নবজাতকের নাড়ি কেটে নিরাপদে আনার ব্যবস্থা করি। মা ও শিশুকে কাপড়, কম্বল এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়েছে। রাতে মা ও নবজাতককে সুরক্ষিত রাখি। বর্তমানে মা-সন্তান সুস্থ আছেন।”

সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে পড়লে রেলস্টেশনে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। অনেকে শিশুটিকে দেখতে আসেন এবং আর্থিক সহায়তা দেন। শিশুটিকে দেখে অনেক নারী কোলে নেন। তবে, কেউই শিশুটির বাবার পরিচয় জানাতে পারেননি।

স্থানীয়দের মতে, মা ও নবজাতকের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সমাজসেবা দপ্তরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, “গতকাল রাতে রেলস্টেশনে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়া একজন মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতি আমাদের হাসপাতালের লেবার রুমে ভর্তি আছেন। বর্তমান মা ও শিশু দুইজন ভালো আছেন। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন  ব্যবস্থা নেবে।”

বিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, “বিরামপুর রেলস্টেশনে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আজকে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মা ও শিশুকে ভর্তি করেছি। বর্তমান তারা ভালো আছেন। ইউএনও মহোদয় ট্রেনিংয়ে আছেন, উনি এলে শিশুটির মঙ্গলের জন্য একটা সুব্যবস্থা করা হবে।” 

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, “বিষয়টি আমি জানি, আমি ট্রেনিংয়ে আছি। সমাজসেবা কর্মকর্তাকে শিশুটির বিষয়ে বলা আছে, উনি দেখবেন। আমি এসে ব্যবস্থা নেব।”