জাতীয়

রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্তদের নামে ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ১২ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনো পুনর্বাসন করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের-এমন অভিযোগ তুলেছেন রানা প্লাজা সারভাইভারস অ্যাসোসিয়েশন।

তাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের নামে দেশে-বিদেশে তিনটি সংস্থা ও কয়েকটি বিদেশি এনজিও প্রায় ৩৫ কোটি টাকা অনুদান তুললেও তা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।

বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনের ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে গ্লোবাল প্রেস অফিসের লন্ডনে বসবাসকারি ইয়াসমিন এ চৌধুরী এবং বাংলাদেশে বসবাসকারি ব্যারিস্টার এমডি জাকারিয়া উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জানানো হয়, রানা প্লাজা সারভাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন দেশে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা যৌথভাবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস) মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক ইয়াসমিন এ চৌধুরী হ্যাপি, যিনি আগামী ২০২৮ সালে লন্ডন মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ ও বিদেশের আইনজীবীরা এই মামলায় একসঙ্গে কাজ করবেন বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে মামলার সমন্বয়ক ব্যারিস্টার এমডি জাকারিয়া বলেন, “রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনের ভিকটিমরা এখন এক হয়েছে। তাদের নাম ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে কিছু ব্যক্তি ও সংস্থা প্রায় ৩৫ কোটি টাকা তুলেছে, যা তাদের হাতে পৌঁছায়নি। বিষয়টি জানার পর ভিকটিমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনগত ব্যবস্থা নেবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ তাদের নাম ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য কারো বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে অবস্থান নেওয়া নয়, বরং যারা শ্রমিকদের নামে অনুদান নিয়ে আত্মসাৎ করেছে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা।”

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসছে ২৪ নভেম্বর ২০২৫ তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনার ১৩ বছর পূর্তিতে দিবসটি পালনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। কারণ, এখনো অনেক শ্রমিক আহত অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।