:: সংক্ষিপ্ত স্কোর || তৃতীয় দিন শেষে :: আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৮৬/১০ (৯২.২ ওভারে) বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫৮৭/৮ (১৪১ ওভারে) ডিক্লে. আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৮৬/৫ (২৯ ওভারে) পিছিয়ে: ২১৫ রানে।
৫ উইকেটে ৮৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করল আয়ারল্যান্ড যেভাবে আয়ারল্যান্ডের উইকেট মিছিল শুরু হয়েছিল, তাতে তৃতীয় দিনে আর ১০ ওভার থাকলে ইনিংস কোথায় যেত ভাববার বিষয়। তবে ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে হাফ ছেড়ে বেঁচেছে আইরিশরা। অন্যদিকে বাংলাদেশ খোশ মেজাজে মাঠ ছেড়ে সফরকারীদের অর্ধেক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়ে।
তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের চেয়ে আয়ারল্যান্ড এখনো ২১৫ রানে পিছিয়ে। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ৪ রানে ও ম্যাথু হামফ্রিজ শূন্যরানে অপরাজিত আছেন। তারা দুজন আগামীকাল শুক্রবার চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নামবেন।
বাংলাদেশের হাসান মুরাদ ২টি এবং তাইজুল ও রানা ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
৮৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল আয়ারল্যান্ড ৮৪ রানের মাথায় আরও একটি উইকেট হারাল সফরকারীরা। এবার হাসান মুরাদের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন লরকান টাকার। ২০ বল খেলে ২ চারে ৯ রান করেন তিনি। ম্যাকব্রাইনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ম্যাথু হামফ্রিজ।
৮২ রানে ৪ উইকেট নেই আয়ারল্যান্ডের দলীয় ৮২ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারাল আয়ারল্যান্ড। এবার হাসান মুরাদের বলে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন কুর্টিস ক্যাম্ফার। ১৯ বলে ১ চারে ৫ রান করেন তিনি। লরকান টাকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
টেক্টরকে ফেরালেন তাইজুল ৬৮ রানের মাথাও আরও একটি উইকেট হারাল আয়ারল্যান্ড। এবার তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউ হন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। ৪৭ বল খেলে ১ চারে ১৮ রান করেন তিনি। ২১.১ ওভার শেষে ৩ উইকেটে আয়ারল্যান্ডের রান ৬৮। পিছিয়ে ২৩৩ রানে।
স্টারলিংকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি পল স্টার্লিং ক্রিজে থিতু হয়ে ব্যাট করছিলেন। তার ব্যাটে ভর করে আয়ারল্যান্ড ১৭.২ ওভারে ৬১ রানে পৌঁছে যায়। কিন্তু এই রানে তিনি কাটা পড়েন রান আউটে। নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রোতে আউট হন তিনি। যাওয়ার আগে ৫৯ বলে ৭টি চারে ৪৩ রান করে যান।
স্টার্লিংয়ের ব্যাটে ফিফটি পেরিয়ে আয়ারল্যান্ড ১৪ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারালেও পল স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টরের ব্যাটে ফিফটি পেরিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ১৩ ওভার শেষে তাদের রান ৫৪। স্টার্লিং ৩৯ ও টেক্টর ৮ রানে ব্যাট করছেন।
আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত রানার নাহিদ রানার করা ১৪২.৬ কিলোমিটার গতির বলটি বুঝতে পারেননি কেড কারমাইকেল। বলটি ইনওয়ার্ড মুভমেন্ট করে ব্যাট ও প্যাডের মাঝখান দিয়ে মিডেল ও অফ ট্যাম্পে হিট করে। ৩.৩ ওভারের মাথায় দলীয় ১৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আইরিশরা। ৮ বল খেলে ১ চারে ৫ রান করে যান কারমাইকেল।
৫৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের: ৮ উইকেট হারিয়ে ৫৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। লিড পেয়েছে ৩০১ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ড ব্যাট করতে নামবে আয়ারল্যান্ডের ম্যাথু হামফ্রিজ ৪৩ ওভারে ১৭০ রানে ৫টি উইকেট নেন। বাংলাদেশের জয় ও শান্ত সেঞ্চুরি করেন। হাফ সেঞ্চুরি করেন সাদমান, মুমিনুল ও লিটন।
দেশের মাটিতে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান, চা বিরতি:
টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রানের সেরা তিনটি ইনিংসই দেশের বাইরে। ৬৩৮, শ্রীলঙ্কার গলে। ৫৯৮/৮, নিউ জিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে। ৫৬৫, পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডিতে। এরপর ছিল মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৫৬০ রান। বৃহস্পতিবার সেই রান ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ দলীয় রান সংগ্রহের রেকর্ড হলো। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের রান এখন ৭ উইকেটে ৫৭৫। হাসান মুরাদ ও হাসান মাহমুদ ব্যাটিং করছেন। দেখা যাক, চা বিরতির পর কতদূর যায় তাদের লড়াই।
শান্তর পর ফিরলেন মিরাজও দলীয় ৫৪৫ রানের সময় ১০০ করে শান্ত আউট হন। এরপর ৫৬১ রানের মাথায় ফিরেন মিরাজও। হামফ্রেসের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয় ব্যক্তিগত ১৭ রানে। টেল এন্ডার হাসান মুরাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন হাসান মাহমুদ।
সেঞ্চুরি করেই ফিরলেন শান্ত ম্যাকব্রাইনের করা ১২৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি ডিপ ফাইন ও ডিপ স্কয়ালের মাঝখান দিয়ে ঠেলে দিয়ে ২ রান নিলেন শান্ত। তাতেই ৯৮ থেকে তার রান পৌঁছে যায় ১০০ তে। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি করে পরের বলেই এলবিডব্লিউন হন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিষিক্ত হাসান মুরাদ।
শান্তর অষ্টম সেঞ্চুরি, আড়াইশ ছাড়িয়ে বাংলাদেশের লিড ১১২ বলে ১৪ চারে টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যা সবশেষ পাঁচ ইনিংসে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। শান্তর ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশের লিড আড়াইশ ছাড়িয়েছে।
ফিফটি করে ফিরলেন লিটন, সেঞ্চুরির পথে শান্ত ফিফটি করে সেটিকে বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না লিটন দাস। দলীয় ৫২৩ রানের মাথায় ম্যাথু হামফ্রেসের বলে হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ৬৬ বলে ৮টি চার ও ১ ছক্কায় ৬০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শান্ত ৯১ রানে অপরাজিত আছেন।
লিটনের ফিফটি জয়ের সেঞ্চুরি, সাদমান-মুমিনুল-শান্তর পর ফিফটির দেখা পেলেন লিটন দাসও। ৫২ বলে ৭টি চার ও ১ ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছান তিনি। তার ৫১ ও শান্তর ৮৮ রানে ভর করে বাংলাদেশ ১২১.৪ ওভারে ৫১২ রান পেরিয়ে গেছে।
বাংলাদেশের দ্রুততম ৫০০! বাংলাদেশ দ্রুততম ৫০০ রানের রেকর্ডও গড়েছে। ১১৭.৩ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় রান ৫০০ ছুঁয়ে ফেলে। টেস্ট ক্রিকেটে যা বাংলাদেশের দ্রুততম দলীয় ৫০০ রান। এর আগে ২০১৭ সালে ১২১.২ ওভারে দলীয় ৫০০ পেরিয়েছিল দল।
শান্ত-লিটনের ব্যাটে ৫০০ রান পেরিয়ে বাংলাদেশ শান্ত ও লিটনের ব্যাটে মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৫০০ রান পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১১৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫০৯। শান্ত ৮৮ ও লিটন ৪৯ রানে ব্যাট করছেন। বাংলাদেশের লিড বেড়ে হয়েছে ২২৩।
প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন তিনটি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় (১৭১), মুমিনুল হক (৮২) ও মুশফিকুর রহিম (২৩) আউট হয়েছেন। শান্ত ৬১ ও লিটন দাস ১৯ রানে অপরাজিত থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছেন। এ সময় পর্যন্ত ১১১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৪৪৭। লিড হয়েছে ১৬১ রানের।
২৩ রান করে ফিরলেন মুশফিক ক্যারিয়ারের ৯৯তম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সুবিধা করতে পারলেন না মুশফিক। দলীয় ৪২৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৩ রানে আউট হন তিনি। তার উইকেটটি নেন ম্যাথু হামফ্রেস।
শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে ৪০০ পেরিয়ে বাংলাদেশ ৩৩৮ রানে দিন শুরু করা বাংলাদেশ দিনের শুরুতেই হারায় দুই সেট ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হকের উইকেট। ৩৪১ রানের মাথায় জয় ফিরেন ১৭১ করে। আর ৩৪৬ রানের সময় মুমিনুল ফিরেন ৮২ রানে। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করে ৪০০ রান পেরিয়েছে বাংলাদেশ। ১০২ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৪১১। শান্ত ৪৯ ও মুশফিক ১৮ রানে অপরাজিত আছেন।
প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় নাজমুল-মুশফিকুর: ৫ রানের ব্যবধানে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক সাজঘরে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সাত সকালে নতুন বলে দুই পেসার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে থাকেন।
সেই পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার অপেক্ষায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। দুজন প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন। ৫৩ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েছেন।
দিনের প্রথম ঘণ্টা নিশ্চিতভাবেই আয়ারল্যান্ডের দখলে। বাকিটা পথ কেমন যায় সেটাই দেখার।
দিনের শুরুতেই আউট জয়-মুমিনুল
প্রথমে জয়। এরপর মুমিনুল। পেসার ব্যারি ব্যাকারথির পরপর দুই ওভারে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ফিরলেন সাজঘরে। নতুন বলে দিনের শুরুতে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন এই পেসার।
বড় কিছুর আশা দেখালেও হতাশ করে ফিরলেন দুজনই। জয় ১৭১ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ৮০ রানে দিন শুরু করে মুমিনুল যোগ করতে পারেন ২ রান। ৮২ রানে ক্যাচ দেন স্লিপ কর্ডনে। দুটি উইকেটই নেন ব্যাকারথি।
উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের লিড ৬৬ রান।
দ্বিতীয় ওভারে জয়কে হারাল বাংলাদেশ
বড় কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। আগের দিন যেই ছন্দে ব্যাটিং করছিলেন মনে হচ্ছিল ২২ গজে রাজত্ব করবেন। দেড়শ রানের ইনিংসটিকে নিয়ে যাবেন আরো বড় কিছুতে। কিন্তু তৃতীয় দিনের সকালে সেই ছন্দ হারালেন তিনি। দিনের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ফিরলেন সাজঘরে।
পেসার ব্যাকারথির দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। খানিকটা ওয়াবল সিম ডেলিভারিতে পরাস্ত জয়। ১৬৯ রানের সঙ্গে ২ রান যোগ করে আউট হন তিনি। বাংলাদেশ হারাল দ্বিতীয় উইকেট।
উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের লিড ৬০ রান।
রান পাহাড়ের পথে বাংলাদেশ
সিলেটে প্রথম দুদিন রাজত্ব করেছে বাংলাদেশ। আজ তৃতীয় দিন বড় কিছুর অপেক্ষায় স্বাগতিকরা। ২৮৬ রানে আয়ারল্যান্ডকে আটকে দেওয়ার পর প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ৩৩৮ রান তুলেছে বাংলাদেশ। লিড ৫২ রানের।
টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন রান। মাহমুদুল হাসান জয় ক্যারিয়ার সেরা ১৬৯ রান নিয়ে বুধবার তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছেন। মুমিনুল হক অপেক্ষায় আছেন সেঞ্চুরির। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮০ রান। ১৩ সেঞ্চুরি নিয়ে সেঞ্চুরির সংখ্যায় সবার উপরে রয়েছেন তিনি। আজ তিন অঙ্ক ছুঁতে পারলে আরো একধাপ এগিয়ে যাবেন।
গতকাল ৮০ রানে থেমে যান সাদমান ইসলাম। তার ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি এলে ইনিংসটি পূর্ণতা পেত।
আয়ারল্যান্ডের গড়পড়তা বোলিংয়ের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন একেবারেই সাচ্ছন্দ্যে। ঢিলেঢালা বোলিংয়ের বিপক্ষে অনায়েসে রান তোলেন ব্যাটসম্যানরা। ছিল চার-ছক্কার ফুলঝুরি।
মুমিনুল ও জয় ১৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করছেন। কতদূর যায় তাদের ব্যাট সেটাই দেখার।
উইকেট আজ থেকে ভাঙতে শুরু করতে পারে। গতকাল স্পিনারদের বল একটু একটু করে বাড়তি টার্ণ পাওয়া শুরু করেছে। প্রথম ইনিংসে তিনশ বা তার বেশি লিড পেলে ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে স্বাগতিকরা। সেজন্য ব্যাটসম্যানদের আরেকটি দিন ভালো কাটাতে হবে। আইরিশদের মামুলি বোলিংয়ের সামনে যা অনেকটাই সম্ভব।