ক্যাম্পাস

পরিত্যক্ত ঘোষণার ৬ মাস পর সংস্কার ছাড়াই চালু অডিটোরিয়াম

পরিত্যক্ত ঘোষণা করার ৬ মাস পর কোনো ধরনের সংস্কার ছাড়াই ফের চালু করা হয়েছে নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল অডিটোরিয়াম।

নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন, অবকাঠামোসহ সামগ্রিক অগ্রগতির পথিকৃৎ ছিলেন সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম আব্দুল জলিল। তার নামে ২০০৪ সালে নির্মিত একমাত্র অডিটোরিয়ামটির নামকরণ করা হয়। কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের একমাত্র এই স্থানটি প্রায় ৬ মাস আগে ব্যবহার অনুপযোগী ও সংস্কারের আশ্বাসে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

এরপর থেকে আর কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে কলেজ মাঠে, জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনসহ বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারের হল ভাড়া করে তাদের অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করেন। কোনো সংস্কার ছাড়াই গত সোমবার (১০ নভেম্বর) গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিদায়ী সংবর্ধনা ও ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় কলেজ প্রশাসন।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে কলেজ প্রশাসন অডিটোরিয়াম ব্যবহারের অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এতে কলেজের অডিটোরিয়ামটি সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই হাতের বাম পাশে অবস্থিত অধ্যক্ষ আবদুল জলিল অডিটোরিয়াম। অডিটোরিয়ামের প্রধান ফটকের কাঁচের তৈরি দরজা, কিন্তু একটিরও কাঁচ নেই। অডিটোরিয়ামের বাইরের অংশে একপাশে ভাঙা আসবাবপত্র ও অন্যপাশে ময়লা-আবর্জনা স্তুপ হয়ে পড়ে আছে। ভেতরের চেয়ারগুলোর অবস্থাও বেশ নড়বড়ে।

উপরে কিছু পুরাতন বৈদ্যুতিক পাখা, ধুলোবালি জমা মূল মঞ্চের একপাশ আংশিক ভেঙে গেছে, সাউন্ডপ্রুফ দেয়ালের অধিকাংশ স্থানে ঘুণ ধরে নষ্ট হয়ে গেছে, নেই আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম। 

বৃষ্টি হলেই টিনের ছাল দিয়ে পানি পড়ে, আবার একটু বেশি বৃষ্টিপাত হলে মেঝে পানিতে ডুবে যায় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ আছে, বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনামলে উন্নয়ন আর সংস্কারের নামে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ন্যায় নোয়াখালী সরকারি কলেজেও চলেছে লুটপাট। অডিটোরিয়াম সংস্কারের জন্য ২-৩ বার অর্থ বরাদ্দ হলেও তৎকালীন কলেজ প্রশাসন নামমাত্র কাজ দেখিয়ে তা লুটপাট করেছেন।

কলেজের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে তাদের তেমন কোন দায়িত্ববোধ ও তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ৫ আগষ্টের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের পরও অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে বড় ধরনের সংস্কার এবং উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় শিক্ষার্থীরা হতাশ। অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল অডিটোরিয়ামসহ কলেজের সার্বিক উন্নয়নে কলেজ প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা।

সার্বিক বিষয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এবিএম সানা উল্লাহ বলেন, “কলেজের অডিটোরিয়াম এখন মোটামুটি ব্যবহারের উপযোগী আছে। শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আরো কেউ অনুষ্ঠান করতে চাইলেও বিবেচনা করা হবে।”

তিনি বলেন, “কলেজের একমাত্র এই অডিটোরিয়ামটি সংস্কারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সংস্কারের বরাদ্দ হয়েছে কিনা, বা বরাদ্দ হয়ে থাকলে এখন কোন অবস্থায় আছে তা নির্দিষ্টভাবে আমার জানা নেই। বিস্তারিত জেনে তারপরে জানাতে পারব।”