আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের সহায়তায় ফিলিস্তিনিরা গাজা ছাড়ছে?

সবকিছু শুরু হয়েছিল আল-মাজদ ইউরোপ সংস্থার একটি বিজ্ঞাপনী পোস্ট দিয়ে। ওই পোস্টে গাজা উপত্যকার বাইরে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাই অনেক ফিলিস্তিনি ওই পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, তাদের আবেদনপত্র পূরণ করেছেন এবং সংস্থার কাছ থেকে একটি ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

গাজার পরিস্থিতি ফিলিস্তিনিদের উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করেছে। তারা সবকিছু হারিয়েছে। তারা তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে এখানে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।

সমস্যা হচ্ছে, ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া এক জন ফিলিস্তিনিও গাজা থেকে বের হতে পারে না। তাহলে কীভাবে তারা গাজা থেকে বের হবে?

ওই ফিলিস্তিনিরা গাজার মধ্যবর্তী এলাকায় একটি বাসের মধ্যে ছিল। তারা তাদের প্রস্থানের কয়েক ঘন্টা আগে একটি ফোন কল পেয়েছিল। তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তথাকথিত হলুদ রেখা (ইয়োলো লাইন) অতিক্রম করেছিল। এই বাসটি তারপর কারেম আবু সালেম (কেরেম শালোম, ইসরায়েলিদের কাছে) ক্রসিং এবং তারপর দক্ষিণ ইসরায়েলের র‍্যামন বিমানবন্দরে গিয়েছিল। শুধু এই একটি বাস নয়, কয়েকটি বাসই ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ইসরায়েলের র‍্যামন বিমানবন্দরে গিয়েছিল। ১৫৩ ফিলিস্তিনিকে নিয়ে একটি চার্টার বিমান কেনিয়ার নাইরোবিতে যাত্রাবিরতির পর বৃহস্পতিবার সকালে জোহানেসবার্গের ও.আর. টাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যাত্রীদের কাছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কোনো বহির্গমন স্ট্যাম্প ছিল না, তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় কতদিন থাকবেন তাও উল্লেখ ছিল না এবং স্থানীয় ঠিকানাও ছিল না। এর ফলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।

বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এবং গিফট অফ দ্য গিভার্স নামে একটি স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ফিলিস্তিনিদের থাকার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেওয়ার পর পরিবার ও শিশুসহ ১৫৩ জন যাত্রীকে বিমান থেকে নামতে দেওয়া হয়। 

অক্টোবরের যুদ্ধবিরতি থেকে কমপক্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে শুধুমাত্র হলুদ রেখা অতিক্রম করার জন্য। তাই প্রশ্ন হচ্ছে, শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গাজা থেকে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থাটি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় ছাড়া কীভাবে সম্ভব?