জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা ও বড় ভাই।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রায় ঘোষণার পর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করেন জুলাই যোদ্ধারা। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ের বিষয়ে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘‘এই রায়ে আমরা খুশি। তবে রায় ঘোষণা হতে যে দীর্ঘসূত্রিতা হয়েছে, কার্যকর করতে যেন সময়ক্ষেপণ না হয়।’’ দ্রুত শেখ হাসিনাসহ সকল অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি করেন তিনি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান। ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও ভারতে অবস্থান করছেন। দেশটির একটি হোটেলে বসে আড্ডারত অবস্থার তার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘‘আজকের রায়ে ভালো লাগছে কিন্তু ছেলের কথা খুব মনে পড়ছে। সরকারের কাছে আমার দাবি, শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা যেন বাংলার মাটিতে আর আসতে না পারে।’’ সেই বিষয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি করেন শহীদ আবু সাঈদের মা।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, ‘‘আমি আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদী। রায়কে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেই সমস্ত সংবাদে আমরা আতঙ্কিত।’’ শহীদ পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান রমজান আলী।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হয়। এরপর এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এর ফলে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।