নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ নয়দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে সনিক বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। ইপিজেডের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। শ্রমিকদের দাবি, অন্যায় ছাঁটাই বন্ধ, ছুটিতে স্বচ্ছতা, খাবারের সময় বৃদ্ধি, নির্ধারিত সময়ে ছুটি প্রদানসহ কর্মপরিবেশ পুনর্বিন্যাস।
শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, বিনা কারণে তাদের দুই সহকর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক আলামিন ইসলাম বলেন, “ইচ্ছেমতো শ্রমিক ছাঁটাই আর সহ্য করা হবে না। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের বহালসহ নয়দফা দাবি মানতে হবে।”
বিক্ষোভ চলমান থাকা অবস্থায় সনিক বাংলাদেশ লিমিটেড মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) কারখানা বন্ধের নোটিশ জারি করে। নোটিশে বলা হয়, ‘‘শ্রমিকরা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কর্মবিরতি ও উৎপাদন ব্যাহত করেছেন, যা শ্রম আইনবিরোধী। ফলে শ্রম আইন ২০১৯–এর ১৩(১) ধারা অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’’
গত কয়েক মাস ধরে ঠুনকো অজুহাতে উত্তরা ইপিজেডে আওয়ামী লীগের নেতাদের মালিকানাধীন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে। যা ইপিজেডের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ১৭ নভেম্বর শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনার নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা তা উপেক্ষা করেছেন। নোটিশে আরো জানানো হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নতুন নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলা হবে।
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, “কোম্পানির সিদ্ধান্তে ছাঁটাই করা হলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি। তাদের নয়দফা দাবিগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আলোচনা চলছে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উত্তেজনা এড়াতে বাড়তি পুলিশ রাখা হয়েছে।”
বিক্ষোভ, ছাঁটাই, কারখানা বন্ধ ও চলমান আলোচনা— সব মিলিয়ে উত্তরা ইপিজেডে অস্থিরতা বিরাজ করছে। শ্রমিকেরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, আর কর্তৃপক্ষ আইনগত অবস্থান বজায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।