নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে অবস্থিত বগির খাল ব্রিজটি এখন মানুষের কাছে আতংকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটির দুই পাশ ভেঙে যাওয়ায় এটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে ছোট একটি ভুল ডেকে আনছে বড় বিপদ।
উপজেলার খিলা গ্রাম থেকে অতিতপুর হয়ে মোহনগঞ্জ যাওয়ার অন্যতম প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিদিন এই পথ দিয়ে প্রায় দুই হাজার মানুষ চলাচল করেন। অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন এই পথে চলাচল করে। বর্তমানে ব্রিজটি নীরব আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত বছর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) টিআর প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি সংস্কারের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে অপরিকল্পিত কাজ করার কারণে সমস্যা আরো তীব্র হয়েছে। পূর্ণ গাইড ওয়াল নির্মাণ না হওয়া এবং অমনোযোগী কাজের কারণে এই বছরের বর্ষায় ব্রিজের রাস্তায় ভাঙন আরো বেড়েছে।
বামুন্দি গ্রামের অটোরিকশা চালক নুরুল আমিন বলেন, ‘‘আমাদের এই ব্রিজটা আগেই ভালো ছিল। নতুন করে কাজ করার পর আমাদের দুর্দশা আরো বেড়েছে। রাস্তায় ভাঙন বেড়েছে। এই অবস্থায় যাতায়াত করা অনেকটাই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ব্রিজটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ছোট একটি ভুল বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনছে।”
খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাবির বলেন, ‘‘আমাদের এই ব্রিজের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমাদের দাবি, সরকার যেন এখানে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করে।”
লুনেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ আবেদ আলী বলেন, ‘‘আমরা এলজিইডিকে জানিয়েছি। আশা করি, তারা এই সমস্যা দ্রুত সমাধানে কাজ করবে। টিআর প্রকল্পের ৫ লাখ টাকায় কাজ হয়েছে। আমি নিজে আরো ১২ হাজার টাকা খরচ করেছি। অতিরিক্ত বৃষ্টি সমস্যা সমাধানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আল মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে বড় বাজেটের প্রয়োজন। আমরা এ ব্যাপারে সদর দপ্তরে প্রাক্কলন প্রেরণ করেছি। বাজেট পেলে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহ্ নূর রহমান বলেন, “ব্রিজটিকে চলাচলের উপযোগী করতে প্রাথমিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”