নোয়াখালীতে আনসার–ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রায় সাত কোটি টাকার জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও বর্তমান সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করে করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) নোয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বাদী হয়ে নোয়াখালী স্পেশাল সিনিয়র জজ আদালতে মামলাটি করেন।
মামলার আসামি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার নুর উল্যাহর ছেলে।
দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ২০১৪ থেকে ২০১৫ এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নোয়াখালী শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক জালিয়াতি ও অসদাচরণ করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ৩ জন ভুয়া ঋণ গ্রহীতার নামে ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এবং ২০৯ জন ভুয়া সঞ্চয় ঋণগ্রহীতার মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
রেকর্ডপত্র যাচাই করে দুদক দেখেছে, ঋণ আবেদন ফরমে অনুমোদনকারী কর্মকর্তা হিসেবে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন নিজেই স্বাক্ষর করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী যেখানে জেলা কমান্ড্যান্ট বা ব্যাটালিয়ন প্রধানের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক ছিল। বেশ কিছু আবেদন ফরমে ঋণ গ্রহীতার স্বাক্ষরই নেই। ঋণ মঞ্জুর হলেও প্রকৃত গ্রাহক কোনো অর্থ পাননি, বরং মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন নিজেই সেই অর্থ তুলেছেন।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের নির্দেশে ২০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ব্যাংক শাখায় অভিযানে গিয়ে কর্মকর্তারা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাই করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক উপস্থিত না থাকলেও সংরক্ষিত নথিতে অসংখ্য অনিয়ম ধরা পড়ে। ব্যাংকের বিভিন্ন রেকর্ডে ভুয়া দলিল, জাল স্বাক্ষর ও জালিয়াতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তিনি বলেন, “তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন কখনোই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেবে না। আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”