সারা বাংলা

গোপালগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া শেখ আব্দুর রাজ্জাক আলিম মাদরাসায় আয়োজিত এ উৎসবে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। অনুষ্ঠানে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় উপবৃত্তি।

মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ছয়টি স্টলে চিতই, ভাপা, পুলি, তক্তি, নকশি পিঠা, ডিমের পুডিং, পাটিসাপটা, ঝাল চন্দ্রকোনা, চন্দনকুলি, দুধ খেঁজুর, নারকেলের চিড়া, রসপান, হৃদয়হরণ, গোকুলসহ প্রায় ৫০ ধরনের পিঠা নিয়ে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বানিয়ে আনা পিঠার স্বাদ নিতে ও কিনতে স্টলগুলোতে ভিড় করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। উৎসবে মেতে উঠে বিভিন্ন রকমের পিঠার স্বাদ নেন তারা। 

উৎসবে বিভিন্ন ধরনের পিঠা নিয়ে অংশ নেন ছাত্রীরা

অনুষ্ঠানে মাদরাসার ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৪০ হাজার টাকার উপবৃত্তি ও শেষে মেলায় অংশ নেওয়া ছয়টি স্টলের সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি উপ-সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সুনির্মল রায়, ব্যারিস্টার মনোজ কুমার ভৌমিক, নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান ও মাদরাসার অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার সহকারী শিক্ষক বিকাশ কুমার পাল।

প্রধান অতিথি গোপালগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির উপসচিব ও পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “শুধু পাঠ্যবই নয়, শিক্ষার্থীদের নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিকাশের জন্য এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন এবং ভার্চুয়াল জগতের আসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের কোনো বিকল্প নেই। এমন পিঠা উৎসব আয়োজনের মধ্যে দিয়ে হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে মনে করছি।” 

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিন বলেন, “এই মাদরাসার উন্নয়ন কাজ ইতোমধ্যে অনেক এগিয়ে গেছে। পুরো মাদরাসা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে, উপবৃত্তি চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, স্মার্ট লাইব্রেরি ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা মোবাইলের ক্ষতিকর ব্যবহার থেকে দূরে থেকে ইসলামি আদর্শে গড়ে উঠুক। পিঠা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উপবৃত্তি প্রদান-এসব শিক্ষার্থীদের মনন বিকাশের অংশ।”