ক্যাম্পাস

গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাগবে: মাহমুদুর রহমান

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্রের যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে চাই, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারটা লাগবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া যে আপনি গণতন্ত্র রাখতে পারবেন না, সেটা ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে একটা সরকার যে দানব হয়ে ওঠে, তা আমরা দেখেছি।”

তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে আপনার জবাবদিহিতা থাকবে না। আপনি যদি জানেন, আপনাকে কেউ সরাতে পারবে না, তাহলে ক্রমাগতভাবে আপনি ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে অন্তত একটা ভয় থাকে, ৫ বছর পর পর জনগণের কাছে যেতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের গণমাধ্যম; স্বাধীনতা, নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আজ একটা ভালো দিন। কারণ উচ্চ আদালতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহল হয়েছে। আমরা যদি গত ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনের দিকে দেখি, তাহলে দেখবো এই তিন নির্বাচনেই ক্ষমতাশীল সরকার পরাজিত হয়েছে। সুতরাং যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকবে, তারা কাজ করবে, শুধু যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকে। তাই আমরা চাই, এই সরকার একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করুক এবং আমরা জানি যে জুলাই সনদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিভাবে গঠিত হবে তার রোডম্যাপ দেওয়া আছে।”

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা যেন জুলাই সনদ গ্রহণ করে। জুলাই সনদ গ্রহণ করলেই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাব।

তিনি আরো বলেন, “আমরা বাংলাদেশে আবার নতুন করে কোনো সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী চাই না। একজন সাম্রাজ্ঞী দেখেছি, এনাফ। একজন সম্রাজ্ঞীর মাধ্যমেই যেন বাংলাদেশ থেকে এই সম্রাট-সম্রাজ্ঞী ও রাজ পরিবার কালচারের পরিসমাপ্তি ঘটে। একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটাই আমার প্রত্যাশা।”

প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন মিশনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। 

বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান ও রাবি প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফজলুল হক প্রমুখ।

এর আগে, চার দশক পূর্তি উপলক্ষে জমকালো আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রেসক্লাব। সকাল সাড়ে ৯টায় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।

এরপর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি বের হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালি শেষে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘আমরা নির্ভীক সত্য লিখবোই’ স্লোগানে ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করে রাবি প্রেসক্লাব। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন, ক্যারিয়ার ভিত্তিক কর্মশালাসহ চিত্তবিনোদনের আয়োজন করে আসছে সংগঠনটি।