সারা বাংলা

রিকশা চালককে থানায় নির্যাতনের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

চুরির অভিযোগে সিরাজগঞ্জে আনোয়ার হোসেন নামের এক রিকশাচালককে থানায় আটকে নির্যাতন ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে উঠেছে পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“সলঙ্গা থানার এসআই মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ তদন্তের জন্য এসপি স্যার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।”

অভিযুক্ত এসআই মাইনুল হোসেন সলঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ভুক্তভোগী আনোয়ার একই থানার দেওভোগ গ্রামের মৃত জিহাদ হোসেনের ছেলে।

অভিযোগ সূত্র জানায়, গত ১০ জুলাই রাতে এসআই মাইনুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ধুবিল কাটারমহল গ্রামের একটি বাড়িতে চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আনোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। রাতভর থানার হাজতে আটকে রাখা হয় তাকে। পরদিন সকালে তাকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করে চুরির ঘটনায় স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করেন এসআই মাইনুল। স্বীকার না করায় হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় জুলাই আন্দোলনে হামলা ও অস্ত্র লুটের মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়। তারপরেও কোনো তথ্য না পেয়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন মাইনুল। 

পরবর্তীতে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে রিকশাচালক আনোয়ারকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার আগে, আটক করার ঘটনায় পুলিশ কোনো নির্যাতন করেনি এবং ঘুষ নেয়নি মর্মে আনোয়ারের কাছ থেকে ভিডিও রেকর্ড করে রাখেন এসআই মাইনুল।  

ভুক্তভোগী আনোয়ার পুলিশের ভয়ে এতদিন বিষয়টি গোপন রাখলেও গত ১১ নভেম্বর তিনি এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি সাত দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবদেন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “মিথ্যা অভিযোগে এসআই মাইনুল আমাকে থানায় নিয়ে মারধর করার পর ১৬ হাজার টাকা নিয়ে মুচলেকায় ছেড়ে দেন। আমি গরিব মানুষ, ধারদেনা করে আমি এসআই মাইনুলকে ঘুষ দিয়েছি। ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।”   

অভিযোগ অস্বীকার করে সলঙ্গা থানার অভিযুক্ত এসআই মাইনুল হোসেন বলেন, “রিকশাচালক আনোয়ার হোসেনকে একটি চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ বা তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।”