ক্যাম্পাস

ভূমিকম্পে ফাটল: রাবি শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থীদের সরানো হচ্ছে

ভূমিকম্পে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের দেয়ালে ভূমিকম্পের কারণে ফাটল দেখা দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অংশের শিক্ষার্থীদের নির্মাণাধীন একটি নতুন হলে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

অবশ্য ফাটল দেখা দেওয়ায় নিরাপত্তা চেয়ে এবং হল পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপরই জরুরি বৈঠক করে নবনির্মিত হলের (সাকিব-রায়হান) বাসযোগ্য ব্লকে শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত দেয় প্রশাসন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের ছাদ থেকে খসে পড়া পলেস্তারা ও পিলারে ফাটল।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বেলা ৩টায় রাকসু প্রতিনিধি, হলের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়, ঝুঁকিপূর্ণ অংশের শিক্ষার্থীরা শনিবার (২২ নভেম্বর) থেকে নতুন হলে উঠতে পারবেন। সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাঈম বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরে দাবি করে আসছি, আমাদের এই হলটি সংস্কার বা আমাদের অন্য কোনো হলে নেওয়ার জন্য। আজকে ভূমিকম্প হওয়ার পরে আমরা সবাই বাইরে বের হয়ে আসি এবং সকাল থেকেই আমরা বিক্ষোভ করে আসছি। আমাদের নতুন হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত এসেছে; আমরা খুবই খুশি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের ছাদে ফাটল।

রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “কয়েকমাস ধরে এই হলের শিক্ষার্থীরা তাদের স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছেন। আমরা আজ সেই দাবিটি আদায় করতে পেরেছি। আমরা জুমার নামাজের পর প্রশাসনের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেছিলাম এবং তারা নতুন হল প্রদর্শন করে আমাদেরকে জানিয়েছেন। শেরা বাংলা হলের শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” এ ব্যাপারে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “সরজমিনে দেখে নিশ্চিত হয়েছি যে, এই হলটি নিঃসন্দেহে ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় ছাত্ররা বা আমরা কেউ নিরাপদ নই। ছাত্রদের পরীক্ষা ও টিউটোরিয়াল চলছে, তাই হুট করে হল বন্ধ করে দেওয়া বা তাদের বাড়ি পাঠানো সম্ভব নয়। জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন যৌথভাবে বসে ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম।

“আজকে রাতের মধ্যে আমরা অ্যালোট দিয়ে দেব; শিক্ষার্থীরা কাল থেকে উঠতে পারবেন। কেউ যদি চান, তিনি অন্য কোথাও থাকতে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক বিষয়। এখানে তারা যে রুমে আছেন, সে অনুযায়ী অ্যালট দেওয়া হবে হবে। আমরা নতুন হলের প্রতি কক্ষে দুজন করে অ্যালোট দেব। তবে যেহেতু নতুন হলে এখনো চেয়ার-টেবিল বা আলমারি নেই; ফলে স্থান সংকুলানের জন্য ফ্লোরিং করে তিনজন থাকতে পারবেন,” বলেন প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম।

তিনি জানান, শেরে বাংলা হল থেকে সরিয়ে নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হলে ৯০টি বাসযোগ্য কক্ষে অ্যালোট দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে দুজন বা তিনজন করে থাকার ব্যবস্থা হলে সর্বোচ্চ ২৭০ জনকে অ্যালোট দেওয়া যাবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “নতুন হলটি এখনো সম্পূর্ণ প্রস্তুত না। রুম নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা চেষ্টা করছি ঝুঁকিটা কমিয়ে তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করা যায় কি না। যারা খুবই ফিল করছে যে, তাদের হল পরিবর্তনের দরকার; তাদের এই সুযোগটা একটা অস্থায়ী ভিত্তিতে আমরা দিতে পারি। সেই ভাবনা থেকে তাদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল প্রশাসনের অনুমতি এবং শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন হলে যেতে পারবেন।”