জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ এর সভাপতি মোসা. উম্মে মাবুদা।
শনিবার (২২ নভেম্বর) তিনি রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উম্মে মাবুদা বলেন, “প্যানেলভিত্তিক রাজনীতি আমার পছন্দ নয়। প্যানেলে ব্যক্তিগত মত ও স্বাধীন অবস্থান হারিয়ে যায়, সেখানে দলীয় স্বার্থই প্রাধান্য পায়। ছাত্র সংসদ হওয়া উচিৎ স্বাধীন মত প্রকাশের জায়গা, রাজনৈতিক এজেন্ডার বাহক নয়। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।”
জকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অনুপ্রেরণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার ইতিবাচক পরিবেশ আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করেছে। প্রার্থীরা পজিটিভ প্রচারণা চালায়, পেপার বিলায়, ভোট চায়—পুরো ক্যাম্পাসেই এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।”
মাবুদা জানান, বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। বর্তমানে বাঁধনেএর সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পাশাপাশি বিএনসিসিতে সার্জেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া, দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া এবং একটি টিমকে এগিয়ে নেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা থেকেই নেতৃত্বের দৃঢ়তা এসেছে তার।
নারী শিক্ষার্থীদের বাস্তবতা ও গ্রুমিং প্রয়োজনীয়তা সমাজিক বাস্তবতায় নারীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতনতার ঘাটতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটা দশম শ্রেণির ছেলে যখন রাত অবধি বাইরে চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়, তখন তারা পলিটিকস সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু একটা মেয়ে মানুষ মায়ের সঙ্গে বসে স্টার জলসা ও জি বাংলা দেখে—সে আসলে বাইরের জগৎ সম্পর্কে ততটা জানে না। সে যখন সেই দুনিয়া থেকে বের হয়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তখন তার অনেক গ্রুমিংয়ের দরকার পড়ে।”
ক্লাস মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধানে একটি বিশেষ উদ্যোগের কথাও জানান তিনি। মাবুদা বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করব, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা সুপারভাইজারকে ডেকে বলতে পারবে।”
জকসু নির্বাচনে নতুন নেতৃত্বের আশা নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানান।