টেস্ট ক্রিকেটে শততম টেস্টে একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন রিকি পন্টিং। মুশফিকুর রহিমের সেই সুযোগ ছিল। ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও তার ব্যাট থেকে আসে ঝকঝকে ৫৩ রান।
দারুণ ব্যাটিং করছিলেন। ঘণ্টা দেড়েক বা এক সেশন পেলেই হয়তো আরেকটি তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলতেন। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট মুশফিকুরের সেঞ্চুরির অপেক্ষা করেননি। ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ ৫০৯ রানের বিশাল টার্গেট দেয় আয়ারল্যান্ডকে।
মুশফিকুরকে সেঞ্চুরির সুযোগ দেওয়া যেত কিনা সেই প্রশ্ন উঠল দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে। ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল জানালেন, টিম ম্যানেজমেন্ট দলের কথা ভেবেই ইনিংস ঘোষণা করেছে। মুশফিকুরের ব্যক্তিগত মাইলফলকের কথা চিন্তা করেনি। অবশ্য মুশফিকুরের বিষয়টি চিন্তা না করলেও মুমিনুলকে সুযোগ দিয়েছিল দল।
লিড পাঁচশ ছাড়ানোর পরও ব্যাটিং চালিয়ে গেছে বাংলাদেশ। মুমিনুল তখন ছিলেন আশির ঘরে। কিন্তু ৮৭ রানে তার ইনিংস কাটা পড়ে লেগ স্পিনার হোয়ের বলে। এরপরই বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে।
নাজমুল ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে ইনিংস ঘোষণা করলে মুশফিকুরও দৌড়ে বেরিয়ে আসেন মাঠ থেকে। তিনিও স্পোর্টিংলি বিষয়টি গ্রহণ করেছেন তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।
আশরাফুলও একই কথা বললেন দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে, ‘‘আসলে এটা একটা দলগত খেলা। ব্যক্তির কথা চিন্তা করে না। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, ব্যাক্তি পারফরম্যান্স করলেই টিম পারফরম্যান্সটা হয়। কিন্তু এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যে… আমাদের অলরেডি ৫০০ রান হয়ে গিয়েছে।‘’
‘‘আয়ারল্যান্ডের ১০ উইকেট নিতে আমাদের যেই ওভার ছিল তা প্রয়োজন ছিল। হ্যাঁ আপনি চাইলে আরো এক ঘণ্টা খেলাতে পারতেন। কিন্তু আসলে জিনিসটা সুন্দর লাগবে না স্পিরিট অফ ক্রিকেটে। এই কারণেই আমাদের ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করেছে (ইনিংস ঘোষণার)। মুমিনুল কাছাকাছি ছিল। তাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আনলাকি সে করতে পারেনি।’’ - যোগ করেন তিনি।
কোচ হিসেবে আশরাফুলের যাত্রা শুরু হয়েছে এই সিরিজ দিয়েছে। মুশফিকুর, মুমিনুলের সঙ্গে তিনি একই ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন। তাদের সঙ্গে কাজ করা, বোঝাপড়া কেমন যাচ্ছে জানাতে গিয়ে আশরাফুল বলেছেন, ‘‘আমি যখন ছিলাম মুশফিকুরের অভিষেক হয়েছে আমার সামনে এবং মুমিনুলের টেস্ট ক্যাপটা আমি গিয়েছিলেন। গলে তার অভিষেক হয়েছিল ২০১৩ সালে। এছাড়া আর বাকি সবার সাথে আমার ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছি।’’
‘‘সবাই খুব সুন্দর মতোই আমাকে গ্রহণ করেছে। আমিও আমার চেষ্টা করছি যে আমার অভিজ্ঞতাগুলো তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে। এই লেভেলে আপনার টেকনিক নিয়ে অত বেশি পরিবর্তন করার কিছু নাই। শুধুমাত্র মানসিক সহযোগিতকা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। একটা বল খেলার সময় আপনার রুটিনটা কেমন হওয়া উচিত। ওই জিনিসগুলোই যদি শুধু মনে করিয়ে দিতে পারে তাহলেই এনাফ। কোচিং স্টাফ বলেন খেলোয়াড় সবাই খুব সাপোর্ট করছে।’’