ক্যাম্পাস

নানা আয়োজনে ইবির ৪৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৪৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। 

শনিবার (২২ নভেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে দুই পর্বে অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রশাসন।

বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কেক কাটা, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। 

পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে সব বিভাগ ও হল, ইউট্যাব, জিয়া পরিষদ, শাখা ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ইউনিট স্ব স্ব ব্যানারে অংশ নেয়।

শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় ইউট্যাব, জিয়া পরিষদ, শাখা ছাত্রদল ভিত্তিপ্রস্তরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।  

আলোচনা সভায় উপাচার্য বলেন, “ইবি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামিক শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে একটি কার্যকর ‘কম্বাইন্ড এডুকেশন সিস্টেম’ গড়ে তোলা। কিন্তু শুরু থেকে পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনায় কিছু ত্রুটির কারণে আমরা মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির মতো ধারাবাহিক অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি। এ ব্যর্থতার দায় কোনো একক ব্যক্তির নয়, এটি রাষ্ট্রের নীতি, সমাজের কাঠামো এবং সবার সম্মিলিত ত্রুটির ফল।”

তিনি আরো বলেন, “৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো জ্ঞানকে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পুনর্গঠন করা। আমরা এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে চাই, যেখানে বিজ্ঞান, আধুনিকতা, সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিকবিদ্যা এবং ইসলাম সব শাখাই সমন্বিত কাঠামোর মধ্যে বিকশিত হবে। এই সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে।

পরে বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ দোয়াসহ মিলনায়তনে ইরানী চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। 

এদিকে, ৪৭তম দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম উপেক্ষিতসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় যোগ দিয়েও তা বর্জন করে শাখা ছাত্রদল। 

ছাত্রদেলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পরিবর্তে ইরানি চলচ্চিত্র দেখানো হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রশাসনের আয়োজন গত বছরের চেয়েও খারাপ হয়েছে। আমরা হলে ফিস্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়ার নাম ও ছবি বাদ দেওয়া এটা শিক্ষার্থীদের প্রতি অপমান। কেক কাটার সময় বিশৃঙ্খলা হয়েছে, আর আমাদের শুধু নামমাত্র ডাকা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো দিনে প্রশাসনের অবহেলা ও উদাসীনতা অগ্রহণযোগ্য। তাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনাসভা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

অবশ্য বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চে মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শাখা ছাত্রদল। এতে গান, নৃত্য, নাটক পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।