৪ সেঞ্চুরি, ৮ ফিফটি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টে তিন ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এভাবেই নিজেদের মেলে ধরেছেন। সংখ্যাটি আরো বাড়তে পারত। যদি বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা না করতে শুক্রবার দুপুরে। আবার না-ও হতে পারত। সেই বিতর্কে আপাতত না আগানোই ভালো।
প্রাপ্তির বিষয় হচ্ছে, নিজেদের ১৫৬ টেস্টে ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে ভালো সময় কাটাল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে ১০ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরি ছিল বাংলাদেশের। মাঝের লম্বা সময়ে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে কেটেছে বাংলাদেশের বছরের পর বছর।
বাংলাদেশের ‘পথের কাঁটা’ হয়ে আছে ব্যাটসম্যানদের ইনিংস বড় করতে না পারার অভ্যাস। থিতু হওয়ার পর বেশিরভাগ সময়ই আউট হয়ে যান ব্যাটসম্যানরা। আবার সেঞ্চুরি পেলে সেটাকে ডাবলে রূপ দিতে না পারার ব্যর্থতা তো আছেই। এবারের আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস সেঞ্চুরি পেয়েছেন। জয়ের ১৭১ বাদে বাকি কেউই পারেননি সেঞ্চুরির ইনিংসটিকে বড় করতে।
আবার ফিফটি করেই তৃপ্ত অনেকে। সাদমান ইসলাম ৮০, ৩৫ ও ৭৮ রান করে আউট হয়েছেন। মুমিনুল হক ৬৩, ৮৭ ও ৮২ রান করেছেন। অথচ টপ অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যানেরই সুযোগ ছিল ইনিংস লম্বা করার। যতক্ষণ চাই ব্যাটিং করার। কিন্তু বড় রান করার অনভ্যস্ততা ফুটে উঠল তাদের ব্যাটে।
ব্যাটিং কোচ হিসেবে সদ্যই নিয়োগ পাওয়া মোহাম্মদ আশরাফুলের চোখে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি নেই, ‘‘৫০ করে বা ৭০ করে যে আউট হচ্ছেন এইটা নিয়ে তারা চিন্তা করছেন এবং কিভাবে এই জায়গা থেকে বড় রান করা যায় এই বিষয় নিয়ে তারাও চিন্তা করছেন এবং আশা করব যে, ২০২৭ পর্যন্ত আমাদের ৮টি টেস্ট ম্যাচ আছে। ওই পর্যন্ত একটি লক্ষ স্থির করা আছে। তারা সেভাবেই খেলছে এবং নিজেদের প্রস্তুতি সেভাবেই নিচ্ছে।’’
আশরাফুল বিরতি দিয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসতে চাইলেন, ‘‘তিন মাস বা চার মাস পর পর আমাদের টেস্ট হয়। ওই জায়গাটাতে আসলে খেলোয়াড়দের মানিয়ে নেওয়াটা মুশকিল হয়ে যায়।’’
এজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে লাগাতার বড় ইনিংস খেলার দিকে মনোযোগ দিতে বললেন তিনি, ‘‘শেষ তিন বছর ধরে আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডিউক বলটা ব্যবহার করি। দেখবেন যে এক মৌসুমে মুমিনুল ৩৯০ রান করেছেন কোন সেঞ্চুরি ছাড়া। ডিউক বলে কিন্তু আসলে প্রত্যেকটা বলই চ্যালেঞ্জিং হয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি আপনি বড় বড় ইনিংস খেলেন, আপনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০০-৩০০ করবেন তখন কিন্তু আপনি আশা করতে পারবেন টেস্ট ম্যাচে ২০০-৩০০ করবেন। রাতারাতি এসে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলাটা আশা করাটা আমাদের ঠিক হবে না। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আসতে হবে।’’