৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আবারও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার রেলযাত্রী।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর থেকে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী রেললাইনের ওপর বসে আছেন। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অল্প কিছু শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছিলেন। ফলে, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে শনিবারও একই দাবিতে তারা রেললাইন অবরোধ করেন। শনিবার দুপুর থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অবরোধ চলার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রবিবার দুপুরে রাবি-সংলগ্ন স্টেশন বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা রেলপথেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে আন্দোলনকারীদের একজন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার সভাপতি মাহবুব আলম দাবি করেন, তারা প্রকৃতপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী আছেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবরোধের কারণে দুপুর আড়াইটার কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। ছাড়তে পারেনি সাড়ে ৩টার টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, ৪টার পদ্মা এক্সপ্রেস এবং ৫টা ২০ মিনিটের ঢালারচর এক্সপ্রেস। ঢাকা থেকে আসা চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেসও আটকে আছে হরিয়ান স্টেশনে।
সন্ধ্যায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেসের যাত্রী আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই কয়জন ছাত্রের জন্য এভাবে হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যায় না। দেশে কোনো শৃঙ্খলা নেই। যার যা খুশি তাই চলছে।”
স্টেশনের মাস্টার জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, প্রতিটি ট্রেনে কমপক্ষে ৮০০ জন যাত্রী দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। কখন ট্রেন ছাড়বে তারা নিশ্চিত নন। তাই, টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই টাকা নিয়ে বিকল্প পথে রওনা হচ্ছেন, আবার কেউ অপেক্ষায় আছেন। আগের দিনও একই পরিস্থিতিতে শতাধিক যাত্রীকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছিল। পরে রাত সাড়ে ১০টার পর আটকে থাকা ট্রেনগুলো একে একে ছেড়ে যায়।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার সভাপতি মাহবুব আলম বলেছেন, “আমরা কখনোই চাই না, জনগণের ভোগান্তি হোক। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করলেও পিএসসি একরোখা অবস্থানে আছে। গতকাল উপাচার্য ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা আশ্বাস দেওয়ায় আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু, আজও কোনো ইতিবাচক উত্তর না পাওয়ায় আমাদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে।”