জুদ বেলিংহামের শেষ মুহূর্তে করা সমতাসূচক গোল রিয়াল মাদ্রিদকে বাঁচিয়ে দিল পরাজয়ের হাত থেকে। শনিবার দিবাগত রাতে এলচের মাঠে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুইবার পিছিয়ে পড়েও ২-২ ড্র করে রিয়াল। এই ড্রয়ে বার্সেলোনা থেকে মাত্র ২ পয়েন্টে এগিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে লস ব্লাঙ্কোস।
প্রথমার্ধে ছিল গোল-মিসের উৎসব। অথচ তুমুল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের সেই অর্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতেই। শুরুতেই রাউল আসেনসিওর পাস থেকে কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করার মতো অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে আন্দ্রে সিলভাও খুঁজে পাননি পোস্ট। এরপর থিবো কোর্তোয়া দারুণ এক সেভে বাঁচান দলকে, রাফা মিরের শট ঠেকিয়ে দিয়ে।
একদিকে মাদ্রিদের আক্রমণভাগ ব্যর্থ, অন্যদিকে সুযোগ পেয়েও এলচে বারবার ভুল করেছে। বিশেষ করে ২৭ মিনিটে আন্দ্রে সিলভার এক ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে শট না নিয়ে মিরকে খুঁজতে গিয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। এমবাপ্পে এরপর আরেকবার গোলরক্ষক পেনিয়ার কাছে থামেন। দুই দলের গোলরক্ষকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ হয়।
বিরতির পরও পেনিয়া আগের ছন্দ ধরে রাখেন। রদ্রিগোর শট চমৎকারভাবে ঠেকান তিনি। কোর্তোয়াও তাই। তবু গোল হজম এড়ানো গেল না। ৫৩ মিনিটে জার্মান ভালেরার পেছন দিকের ব্যাকহিল পাস থেকে ফেবাস ক্লোজ রেঞ্জ থেকে বল জালে পাঠান। এগিয়ে যায় এলচে।
এরপর জাবি আলোনসো একের পর এক পরিবর্তন আনেন। বেঞ্চ থেকে নামানো ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ৭২ মিনিটে গোলের সামনে বল পেয়েও শট না নিয়ে এমবাপ্পেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আলভারো নুনিয়েজ তা কাটিয়ে দেন। অবশেষে আক্রমণের চাপ ধরে রেখে ৭৮ মিনিটে হুইসেন গোল করে সমতা ফেরান। এলচের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের কর্নার ক্লিয়ার করতে না পারার ব্যর্থতার সুযোগটা নেন তিনি।
সমতায় ফিরেও থামেনি এলচে। মির ও মার্টিন নেটো দুইজনই লিড পুনরুদ্ধারের সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৮৪ মিনিটে রদ্রিগেজ বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দারুণ শটে এলচেকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ২০১৩ সালে লা লিগায় ফেরার পর এই প্রথম রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয়ের গন্ধ পাচ্ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু নাটক বাকি ছিলই।
৮৭ মিনিটে ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে না পারলে বল এসে পড়ে বেলিংহামের সামনে। তিনি টোকা দিয়ে গোললাইন পার করিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় পেনিয়ার ফাউলের দাবি রেফারি আমলে নেননি।
যোগ করা সময়ের শুরুতেই হতাশা বাড়ে এলচের। এমবাপ্পেকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন ভিক্টর চুস্ত। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।
ম্যাচ শেষে রিয়ালের কোচ আলোনসো বলেন, ‘‘ফুটবল এমনই। ভালো একটা সময় কাটানোর পর হঠাৎ খারাপ ফল আসতেই পারে। সমালোচনা হবে, আমাদের তা মেনে নিয়েই এগোতে হবে। দল এখনো লড়াই করে যাচ্ছে, আমরা উন্নতির জায়গাগুলো দেখব। সামনে অনেক ম্যাচ আছে। আমাদের সেখানেই ফোকাস করতে হবে। আমরা ফলাফলে খুশি নই, তবে ছন্দে ফিরতেই হবে।’’