খেলাধুলা

চেলসির কাছে পাত্তা পেল না বার্সেলোনা

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ১০ জনের বার্সেলোনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ যাত্রায় ছন্দে ফিরল চেলসি। ম্যাচে সবচেয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ১৮ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার এস্টেভাওয়ের দুর্দান্ত একক প্রচেষ্টার গোলটি। যা বহুদিন মনে রাখবে পশ্চিম লন্ডন।

জুল কুন্দের আত্মঘাতী গোলে আগে থেকেই এগিয়ে ছিল এনজো মারেৎস্কার দল। দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় ক্যাপ্টেন রোনাল্ড আরাউহোকে লাল কার্ডে হারানো বার্সা রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জাদুকরি কিছু উপহার দিলেন তরুণ এস্টেভাও।

ডানদিক দিয়ে রিস জেমস একটি সূক্ষ্ম ফ্লিক করে বল বাড়ান তার দিকে। সেখান থেকে এস্টেভাও যেন নাচতে নাচতে পেরিয়ে যান পাও কুবারসি ও আলেহান্দ্রো বালদেকে। এরপর তীরের মতো এক শট পাঠান জালে। উঁচু পোস্ট ঘেঁষে ঢুকে যাওয়া সেই দুর্দান্ত ফিনিশে হতবাক ক্যাম্প ন্যুর প্রতিনিধিরা।

প্রথমার্ধেই চেলসি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বার্সেলোনার ওপর। আক্রমণ, প্রেসিং, মধ্যমাঠের লড়াই সবকিছুর দখল ছিল তাদের হাতে। পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন দলটি ছিল স্পষ্টতই পিছিয়ে; রক্ষণে দুর্বল, আক্রমণে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন, আর চেলসির গোল-ক্ষুধার সামনে পুরোপুরি নিরুপায়।

মাঝমাঠে দারুণ লড়াই করলেও প্রায় সব বলেই দখল নেন ব্লুজদের খেলোয়াড়রা। ম্যাচ শেষে কোচ মারেৎসকা বলতেই পারতেন- চেলসির দায়িত্ব নেওয়ার ১৮ মাসে এর চেয়ে ভালো ৯০ মিনিট তিনি দেখেননি।

শেষ দিকে মাঠে নেমে লিয়াম ডিল্যাপ করেন দলের তৃতীয় গোল। ক্লাব বিশ্বকাপের পর তার প্রথম গোল। এই জয় চেলসিকে সরাসরি নকআউটে যাওয়ার শক্ত ভিত গড়ে দিল। শুধু তাই নয়, মনে হলো- পুরনো সেই ইউরোপ-জয়ী চেলসি হয়তো ফিরছে।

ম্যাচের শুরুতেই এনজো ফার্নান্দেজ বল জালে পাঠালেও, ওয়েসলি ফোফানার হাতছোঁয়ার কারণে গোল বাতিল হয়। এরপর সুযোগ পেয়ে ফাঁকা পোস্টে শট নষ্ট করেন ফেরান তোরেস। এস্টেভাওয়ের ফ্রি-কিক থেকে আবারও অফসাইডে হারিয়ে যায় এনজোর আরেকটি গোল।

তবে গোল পেতে এরপর আর দেরি হয়নি। কর্নার থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণে কুকুরেয়ারার দারুণ দৌড় ও কাটব্যাকে পেদ্রো নেতোর শট লাইনে ক্লিয়ার করেন তোরেস। কিন্তু বল ফিরে লেগে যায় কুন্দের গায়ে আর ঘুরে ঢুকে পড়ে বার্সার জালে।

এরপর বার্সা আরও বিপদে পড়ে ক্যাপ্টেন আরাউহোর বেপরোয়া ট্যাকলিংয়ে। মাত্র ১২ মিনিটের ব্যবধানে তিনি দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে চেলসি পায় সংখ্যাগত সুবিধা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অফসাইডে বাতিল হয় আন্দ্রে সান্তোসের গোল। কিন্তু খুশি হওয়ার মতো মুহূর্ত বেশিক্ষণ অপেক্ষা করল না। এরপরই এলো এস্টেভাওয়ের সেই বিস্ময়কর গোল।

সবশেষে বদলি হিসেবে নামা ডিল্যাপ এনজো ফার্নান্দেজের পাস থেকে অনায়াসে দলকে তৃতীয় গোল এনে দেন আর নিশ্চিত করেন দাপুটে জয়।

এই জয়ে ৫ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে চেলসি। অন্যদিকে সমান ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে ১৫তম অবস্থানে।