দেশের অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ খাতের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, “উৎপাদন থেকে বিপণন প্রত্যেক পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান নীরব হলেও জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। তবে খাতের উৎপাদন বজায় রাখা এবং নির্বিঘ্ন রাখতে পারাটাই বর্তমানের প্রধান চ্যালেঞ্জ।”
বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বল্প পুঁজিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, নারীর ক্ষমতায়নে, বাণিজ্যিক খামার ও সহায়ক শিল্প গড়ে তুলতে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এবং সুস্থ, সবল জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
ফরিদা আখতার আরো বলেন, “প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প ও বেসরকারি বিনিয়োগের ফলে দেশে দুধ, ডিম ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য অপ্রতুলতা, সংক্রমণযোগ্য রোগ এবং এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “প্রাণিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ বরদাস্ত করা হবে না এবং এ জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।”
উপদেষ্টা জানান, জাতীয় পর্যায়ে এত বড় পরিসরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপন এবারই প্রথম। এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি।’
তিনি বলেন, “গ্রামীণ নারীরা তাদের পরিবারের সদস্যের মতো প্রাণি পালন করেন, যা রোগ কমাতে সাহায্য করে এবং উৎপাদন খরচও কম রাখে।”
ফরিদা আখতার রমজান মাসে স্বল্পমূল্যে প্রাণিজ পণ্য বিতরণের উদ্যোগও তুলে ধরেন। ২০২৫ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এবং খামারিদের সহযোগিতায় ৪৯৫টি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে দুধ, মাংস ও ডিম বিতরণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৯ লাখ ৬৮ হাজার ভোক্তার মাঝে ৩১ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার টাকার সমমূল্যের পণ্য পৌঁছেছে।
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ খাতকে এগিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও রেসিডিউ নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, জলবায়ু-সহনশীল খামার ব্যবস্থাপনা, দেশীয় জাত সংরক্ষণ এবং খামারিদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি।”