খেলাধুলা

আর্সেনাল পাঁচে পাঁচ, পেছনেই পিএসজি

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে বুধবার দিবাগত রাতে জয় পেয়েছে আর্সেনাল ও পিএসজি। আর্সেনাল হাইভোল্টেজ ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখকে। আর প্যারিস সেন্ত জার্মেই (পিএসজি) ৫-৩ গোলে হারিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পারকে।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আর্সেনাল। তাদের কাছে হেরে বায়ার্ন নেমে গেছে তৃতীয় স্থানে। আর দারুণ জয়ে পিএসজি অবস্থান নিয়েছে আর্সেনালের পেছনে। ৫ ম্যাচ থেকে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে গার্নার্সরা। আর ১২ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে দ্য প্যারিসিয়ান্সরা।

বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দলকে অসাধারণ জয় এনে দেওয়ার পর ফুটবলারদের প্রশংসায় ভাসালেন আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা। এই জয়ে শেষ হলো জার্মান চ্যাম্পিয়নদের টানা ১৮ ম্যাচের অপরাজিত যাত্রা।

বুধবার রাতের হাইভোল্টেজ ম্যাচে বিরতির পর নোনি মাদুয়েকে ও গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির দুই দুর্দান্ত গোল আর্সেনালকে এনে দেয় দারুণ জয়। হাঁটুর চোটে দুই মাস বাইরে থাকার পর দলে ফিরেই প্রথম গোলের দেখা পান মাদুয়েকে। এরপর বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যারের বড়সড় ভুলের সুযোগ নিয়ে মার্টিনেল্লি ব্যবধান বাড়ান। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ৩৬ দলের গ্রুপ টেবিলের এক নম্বরে বসে এখন আর্সেনাল।

বায়ার্নও ম্যাচটির আগে চার ম্যাচে চার জয়ের ফুল মার্কে ছিল। তবে এই হার শুধু তাদের শতভাগ সাফল্যের রেকর্ডই ভাঙল না, চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটিই তাদের প্রথম পরাজয়।

এর আগে ম্যাচের ১-০ ব্যবধানে লিড এনে দেন জুরিয়ান টিম্বার। টটেনহ্যামের সাবেক তারকা হ্যারি কেইন যদিও এমিরেটসে ছয় গোলের দুর্দান্ত রেকর্ড নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, আর্সেনাল রক্ষণ ভাঙতে পারেননি তিনি। উল্টো বায়ার্নের ১৭ বছর বয়সী প্রতিভা লেনার্ট কার্ল দারুণ ভলিতে আর্সেনালের বিপক্ষে তাদের প্রথম হজম করা গোলটি উপহার দেন।

এই সপ্তাহে তিনটি বড় ম্যাচের মধ্যে এটি ছিল লীগ-শীর্ষে থাকা আর্সেনালের তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। কারণ এর আগে ডার্বিতে টটেনহ্যামকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে তারা, সামনে আবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা চেলসির মাঠে কঠিন পরীক্ষা।

তবুও আর্তেতা তার তারকাদের বিশ্রাম দেওয়ার প্রলোভনে পড়েননি। হ্যাটট্রিক করা ইবেরেচি এজের মতো খেলোয়াড়রাও নামেন মাঠে। শুধু রক্ষণভাগে কিছু পরিবর্তন এনে মোসকেরা ও লুইস-স্কেলিকে দলে রাখা হয়।

ম্যাচের আগে কেইন বলেছিলেন, এখন প্রিমিয়ার লিগের খেলা নাকি তার কাছে আগের মতো উপভোগ্য লাগে না অতিরিক্ত সেট-পিস নির্ভরতার কারণে। তাই আর্সেনালের প্রথম গোলটি তার চোখে যে খুব সুখকর লাগেনি, তা বলাই যায়।

সাকার কর্নার থেকে টিম্বারের হেডে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। তবে খুব দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসে বায়ার্ন। যোশুয়া কিমিখের লম্বা বল থেকে সার্জ গ্নাব্রি প্রথম ছোঁয়ায় উপহার দেন অসাধারণ অ্যাসিস্ট। আর কার্ল নিখুঁত ভলিতে বল জড়িয়ে দেন জালে। এরপরই একবার প্রায় গোলের পথ তৈরি করেছিলেন কেইন, কিন্তু দু’দফায় বাঁচান সালিবা।

দ্বিতীয়ার্ধে সাকা, মাদুয়েকে ও মিকেল মারিনো গোল খুঁজছিলেন। অবশেষে ৬৯তম মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত গোল। উপামেকানোর ভুলে বল পেয়ে মারিনোর নিচু ক্রস থেকে ছয় গজ দূর থেকে মাদুয়েকে গোলটি করেন। শেষ দিকে আসে নয়্যারের ভয়াবহ মুহূর্ত। এজের লম্বা বল কাটাতে এগিয়ে এসে পুরোপুরি ভুল করেন তিনি। আর মার্টিনেল্লি সহজেই বল নিয়ে ফাঁকা জালে পাঠিয়ে দেন।

এদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজির সঙ্গে শুরুতে ভালোই টক্কর দেয় টটেনহ্যাম। ৩৫ মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে লিড নেয় তারা। ৪৫ মিনিটে ভিতিনহা গোল করে সমতা ফেরান। বিরতির পর ৫০ মিনিটে রন্ডাল কোলো মুয়ানি গোল করে আবার এগিয়ে নেন টটেনহ্যামকে। তবে ৫৩ মিনিটে ভিতিনহা তার জোড়া গোল পূর্ণ করে আবার সমতা ফেরান।

৫৯ মিনিটে ফাবিয়ান রুইজ গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। ৬৫ মিনিটে উইলিয়ান পাচোর গোলে ব্যবধান বেড়ে হয় ৪-২। ৭২ মিনিটে মুয়ানি তার জোড়া গোল পূর্ণ করলে ব্যবধান কমে হয় ৪-৩। কিন্তু ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ভিতিনহা গোল পেলে তার হ্যাটট্রিক পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি পিএসজি এগিয়ে যায় ৫-৩ ব্যবধানে। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পিএসজি।