বলিউডের ‘এভারগ্রিন’ অভিনেত্রী ভানুরেখা গণেশা। সকলের কাছে রেখা নামেই পরিচিত তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে অনেকের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তার। এ তালিকার অন্যতম নাম—ইমরান খান। পাকিস্তানের প্রাক্তন এই ক্রিকেটার পরবর্তীতে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিছুদিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, জেলে থাকা ইমরানকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও এ গুঞ্জনের নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সুদর্শন তারকা ইমরানের সঙ্গে রেখার প্রেমজীবন বহুল আলোচিত বিষয়। বিয়েতে রূপ নিতে গিয়েও তা হয়নি। রেখা-ইমরানের প্রেম-বিয়ে নিয়ে এই প্রতিবেদন—
ইমরান খান ও রেখার গভীর প্রেম আশির দশকে রেখা ও ইমরান খানের প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন শুরু হয়। এ জুটিকে বহুবার একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। তাদের প্রেমকাহিনি গ্ল্যামার ও ক্রিকেট জগতে প্রচণ্ড আলোচনা তৈরি করেছিল। সেই সময়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, রেখা ও ইমরান একসঙ্গে মুম্বাইয়ের সমুদ্রসৈকতে সময় কাটাতেন। কেবল তাই নয়, শুটিংয়ের সময়ও রেখাকে দেখতে যেতেন ইমরান।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ইমরান-রেখা ‘পেইন্টিং দ্য টাউন রেড’ করছিলেন। তারা একে অপরের গভীর প্রেমে মগ্ন ছিলেন। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল—“যারা রেখা-ইমরানকে সমুদ্রসৈকতে একসঙ্গে সময় কাটাতে দেখেছিলেন, তারা তাদের ঘনিষ্ঠতা দেখে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, তারা পরস্পরকে গভীর ও আবেগপূর্ণভাবে ভালোবাসেন।”
মেয়ের বিয়ে নিয়ে জ্যোতিষীর কাছে গিয়েছিলেন রেখার মা প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো দাবি করেছিল, রেখার মা পুষ্পাবল্লী মেয়ের এই সম্পর্ক নিয়ে খুবই খুশি ছিলেন। ইমরান খানকে মেয়ের জন্য সবচেয়ে যোগ্য পাত্র মনে করতেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাদের সম্পর্ককে বিয়েতে রূপ দিতে আগ্রহী ছিলেন। এজন্য এক জ্যোতিষীর কাছেও গিয়েছিলেন পুষ্পাবল্লী। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল—“ইমরান তার মেয়ের আদর্শ জীবনসঙ্গী হতে পারে কি না, তা নিয়ে রেখার মা পুষ্পাবলী দিল্লিতে গিয়ে একজন জ্যোতিষীর সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন। কিন্তু কেউই জানেন না জ্যোতিষী কী বলেছিলেন। তবে রেখার মা নিশ্চিত হয়েছিলেন, ইমরান তার পরিবারের জন্য উপযুক্ত।”
রেখা-ইমরানের বিয়ে কেন হয়নি? অনেক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে রেখা-ইমরানের প্রেমের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছিল। তারপরও এ জুটির প্রেম কখনো পরিণয় পায়নি। এ নিয়ে রেখা কিংবা ইমরান কখনো কারণও প্রকাশ করেননি। ফলে কেউই সঠিকভাবে জানেন না তাদের মাঝে কী সমস্যা হয়েছিল। লাহোরে একটি চ্যারিটি কনসার্টে ইমরান খানের সঙ্গে উপস্থিত হন রেখা। এ মঞ্চে তারা একসঙ্গে নাচেন। এ নিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন এই যুগল। ইমরান খান নাকি সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, “আমি তার (রেখা) সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়েছি, তবে সামনেই এগোতে চাই। কোনো সিনেমার নায়িকাকে বিয়ে করার কথা ভাবতেই পারি না।”
রেখার বিয়ে ১৯৯০ সালে দিল্লির ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালকে বিয়ে করেন রেখা। কিন্তু তার স্বামীর মানসিক বিষণ্নতার সমস্যা ছিল, যা বিয়ের আগে জানতেন না এই অভিনেত্রী। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর এই সমস্যার কারণে তাদের দাম্পত্য জীবনে তিক্ততা তৈরি হতে থাকে। বিয়ের মাত্র ৭ মাসের মাথায় মুকেশ আত্মহত্যা করেন। গুঞ্জন রয়েছে, মুকেশের মৃত্যুর পর বিনোদ মেহরাকে বিয়ে করেন রেখা। তবে বিষয়টি মেনে নেননি বিনোদের মা। শোনা যায়, আশীর্বাদ নিতে রেখাকে নিয়ে মায়ের কাছে গিয়েছিলেন বিনোদ। কিন্তু পুত্রবধূ হিসেবে এই অভিনেত্রীকে মেনে নেননি তার মা। বলিপাড়ায় গুঞ্জন শোনা যায়, রেখার দিকে স্যান্ডেল ছুড়েছিলেন বিনোদ মেহরার মা। এদিকে, বিনোদ মেহরার সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি রেখা কখনো স্বীকার করেননি। এই অভিনেত্রীর দাবি, তিনি শুধু মুকেশ আগরওয়ালকেই বিয়ে করেছেন।
রেখার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ১৯৫৪ সালের ১০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন রেখা। তার মায়ের নাম পুষ্পাবল্লী। তিনি তেলেগু সিনেমার অভিনেত্রী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকের শেষ লগ্নে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ে হাতেখড়ি বলিউডের বর্ষীয়াণ অভিনেত্রী রেখার। ১৯৬৯ সালে নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। সত্তর দশকের শেষের দিকে তারকা খ্যাতি লাভ করেন। ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী। অভিনয় ক্যারিয়ারে দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো—‘খুবসুরত’, ‘খুন ভরি মাঙ্গ’, ‘সিলসিলা’, ‘উমরাও জান’, ‘ইজাজত’, ‘আস্থা’, ‘দো আনজানে’, ‘ঘর’ প্রভৃতি।
তথ্যসূত্র: বলিউড শাদি ডটকম