খাগড়াছড়ির বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গালিচার মতো কেবলই ধান আর ধান। রোদ গায়ে মাখা ধান দূর থেকে অনেকটাই সোনার মতো দেখচ্ছিল। এই ধান কাটতে কাক ডাকা কুয়াশা মোড়ানো ভোর থেকেই মাঠে কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। তাদের অনেকেই আঁটি বাঁধা পাকা ধান ঘরে তুলতে কাঁধে নিয়ে ছুটতে দেখা গেছে।
কৃষকরা বলছেন, গত বছর থেকে এই বছর আমন ধানের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এর মূল কারণ ছিল, অনুকূল আবহাওয়া এবং সময় মতো বৃষ্টি। বাজারে ন্যায্য মূল্য পাবেন এমনটি আশা তাদের।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ২৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। জমি আবাদ হয়েছে ২৯ হাজার ৪১০ হেক্টর। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ২১৮ টন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকদের হাঁকডাকে মুখর চারদিক। জমি থেকে ধান কাটা ও ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তাদের অনেককেই ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছিলেন। সোনালি ধানের গন্ধে ভরে উঠেছে গ্রামীণ সব জনপদ। সবখানেই উৎসবের আমেজ।
খাগড়াছড়ি সদরের গোলাবাড়ী এলাকার কৃষক নিয়হ্লামং মারমা বলেন, “এ বছর আবহাওয়া এবং সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় আমন ধানের চাষ ভালো হয়েছে। এ জন্য আমরা খুশি। কারণ গত বছর বারবার বন্যার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম।”
ঠাকুরছড়া এলাকার চিজি পরিমল ত্রিপুরা বলেন, “ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন জমি থেকে ধান কাটা, শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। সরকারিভাবে যাতে ধানের দাম নির্ধারন এবং সংগ্রহ যাতে জোরদার করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।”
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক নাসিরুদ্দিন জানান, নিবিড় তত্ত্বাবধান, অনুকূল আবহাওয়া, দেশীয় ও হাইব্রিড ধানের যথাযথ চাষ এবং সঠিক বালাইনাশক প্রয়োগের কারণে এ বছর ধান চাষে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। গত বছর পরপর ৪-৫ বার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা।”
তিনি বলেন, “আমন ধানের এ বাম্পার ফলন শুধু কৃষকের মুখে হাসি নয়, পুরো দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়ও আনবে স্বস্তির বার্তা।”