আন্তর্জাতিক

এয়ারবাসের ৬ হাজার বিমান গ্রাউন্ডেড, বিশ্বজুড়ে ফ্লাইটে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা

সৌর বিকিরণের প্রভাবে বিমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দিতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে এয়ারবাস তাদের কয়েক হাজার বিমানের উড্ডয়ন স্থগিত (গ্রাউডেন্ড) করেছে। এতে করে বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যে অনেক ফ্লাইট বাতিল বা স্থগিত করেছে। খবর বিবিসির।

ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের প্রায় ৬ হাজার ‘এ৩২০’ মডেলের বিমান এই সমস্যার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা তাদের মোট বৈশ্বিক বহরের অর্ধেক। এয়ারবাস কর্তৃপক্ষ বলছে, একটি দ্রুত সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে অধিকাংশ বিমানই পুনরায় উড্ডয়ন করতে সক্ষম হবে।

গত অক্টোবরে জেটব্লু এয়ারক্রাফটের মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রগামী একটি বিমান উড়ন্ত অবস্থায় হঠাৎ করে নিচে নেমে আসে। এরপর তদন্তে ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, সৌর বিকিরণের কারণে এমনটি হয়েছে। সৌর বিকিরণ বিমানের কম্পিউটারের একটি ডাটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। এই ডাটা বিমানের উচ্চতাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

ওই সময় জেটব্লু এয়ারওয়েজের ওই ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল এবং এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এরপর শুরু হয় কারণ খোঁজার কাজ।

 

তদন্তে বেরিয়ে আসে, অধিক উচ্চতায় সূর্যের তীব্র বিকিরণ বিমানের অনবোর্ড কম্পিউটারের ‘এলিভেশন’ বা উচ্চতা নির্ণয়কারী ডাটা নষ্ট (করাপ্ট) করে দিতে পারে। এয়ারবাস জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। তবে সতর্কতাস্বরূপ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি জরুরি নির্দেশনায় জানিয়েছে, যাত্রী নিয়ে উড্ডয়নের আগে প্রতিটি বিমানে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এয়ারবাসের জনপ্রিয় ‘এ৩২০’ মডেল ছাড়াও ‘এ৩১৮’, ‘এ৩১৯’ এবং ‘এ৩২১’ মডেলের বিমানেও এই ঝুঁকি রয়েছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, আক্রান্ত প্রায় ৫,১০০টি বিমানে একটি সাধারণ সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, যা করতে সাধারণত তিন ঘণ্টা সময় লাগে।

তবে বিপত্তি বেধেছে পুরোনো সংস্করণের বাকি ৯০০টি বিমান নিয়ে। আপডেট নয়, বরং এই বিমানগুলোর অনবোর্ড কম্পিউটার পুরোটা প্রতিস্থাপন করতে হবে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এগুলো যাত্রী পরিবহনের অনুমতি পাবে না। কম্পিউটার যন্ত্রাংশের প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করবে এগুলো ঠিক করতে কত সময় লাগবে।

এয়ারবাস এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছে যে, এই পরিস্থিতির কারণে যাত্রী ও গ্রাহকদের ‘অপারেশনাল ব্যাঘাত’ ঘটবে এবং এ জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে।