সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার পরিপন্থী বলে হুঁশিয়ার করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অবিলম্বে এ কর্মসূচি থেকে সরে এসে বার্ষিক পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১ ডিসেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এমন সময়ে কর্মবিরতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ঝুঁকিতে ফেলবে।
তিন দফা দাবিতে অনড় শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ। তাদের দাবিগুলো হলো—বেতন স্কেলে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
সরকার আপাতত সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডের প্রস্তাব দিয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ও সেটিকে ‘যৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছে।
দাবি বাস্তবায়নে অগ্রগতি দাবি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড অনুমোদনের পর সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ১০ নভেম্বর অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। পে-কমিশনে বেতন কাঠামো উন্নয়নের প্রক্রিয়াও চলমান।
উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
পরীক্ষা বর্জনে বিদ্যালয় পর্যায়ে সতর্কতা এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও বার্ষিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছে। পরীক্ষায় কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তার উদাসীনতা পরিলক্ষিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি শিক্ষকদের মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সতর্কতা সত্ত্বেও পরীক্ষা বর্জনে অনড় অবস্থান জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, চলমান পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির ধারাবাহিকতায় দাবি না মানা পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন করে তাদের পরীক্ষার কক্ষে ফেরানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও পে-কমিশন কাজ করছে এবং প্রতিবেদন পাওয়ামাত্রই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।