আজ ৪ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়ার খোকসা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পরাজয় ঘটে পাকিস্তানিদের। সেদিন, হাজার হাজার মানুষ মুক্ত খোকসার রাস্তায় বের হয়ে আসেন। খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে র্যালি, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সদর উদ্দিন খান বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানা পাক হানাদার মুক্ত হয়। থানা সদরের খোকসা হাইস্কুল, শোমসপুর হাইস্কুল, গনেশপুরের গোলাবাড়ীর নিলাম কেন্দ্র, মোড়াগাছায় রাজাকার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ জনপদে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে মুক্তিপাগল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ইউনিট।
তিনি বলেন, প্রথমে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি পুলিশের থানা দখলের পরিকল্পনা করে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে মুজিববাহিনী কমান্ডার আলাউদ্দিন খান, কে.এম মোদ্দাসের আলী, নুরুল ইসলাম দুলাল, সাইদুর রহমান মন্টু, রোকন উদ্দিন বাচ্চু, তরিকুল ইসলাম তরুর নেতৃত্বে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা থানা চারদিক থেকে আক্রমণ করেন। রাতভর গুলি বিনিময়ের পর ভোরে ১০৫ জন পুলিশ ও রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
সেখান থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও আটককৃতদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে ক্যাম্পে পৌছান। ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের একটি বড় দল আবার থানা দখলের চেষ্টা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে মিলিশিয়া ও পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের দলটি খোকসা ত্যাগ করে। এরই মাধ্যমে খোকসা হানাদার মুক্ত হয়।
তিনি জানান, ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন। এসময় মুক্তিকামী ছাত্রজনতা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।