সারা বাংলা

মাদক ব্যবসায়ীকে আটক, গ্রাম পুলিশকে পেটালো বিএনপি নেতা 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের ঘটনায় দুই গ্রাম পুলিশকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈর বিরুদ্ধে।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনায় জীবেশ বাড়ৈকে প্রধান আসামি করে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো সাতজনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করেন পুলিশ উপপরিদর্শক মোসলেম আলী।

এ দিকে, ঘটনার পর জীবেশ বাড়ৈকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপি। তাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের জোয়ারিয়া এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে। 

আসামিরা হলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বাইন, হৃদয় তালুকদার ভোলা ও অয়ন বাইন।

মামলা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে পাটগাতী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড ও ৩ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কৃপা মন্ডল ও সুরজিত ঘরামী বিশেষ কাজে গোপালপুর যায়। ফেরার পথে তারা থানার এসআই মোসলেম আলীকে জানায় জোয়ারিয়া এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট বেচাকেনা চলছে। তখন থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসকে ইয়াবাসহ আটক করে। ঘটনাস্থলে থাকা অন্য তিনজন মাদক ব্যবসায়ী এ সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। 

ঘটনা জানার পর জীবেশ বাড়ৈর নেতৃত্বে দশ-বারোজন দুই গ্রাম পুলিশের কাছে জানতে চায়, তারা কেন পুলিশকে খবর দিয়ে বিজনকে গ্রেপ্তার করালো? এক পর্যায়ে তারা দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর করে। কৃপা মন্ডল ও সুরজিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যদিকে আটক মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে আলাদাভাবে মামলা করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কৃপা ও সুরজিত বলেন, ‘‘পুলিশ বিজনকে আটক করে থানায় রওনা দেয়। আমরা পুলিশের পিছনে গেলে হঠাৎ বিএনপি নেতা কিছু লোকজন নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। তারপর বিজনকে কেন পুলিশে ধরিয়ে দিলাম বলে বকাঝকা ও পেটানো শুরু করে। আমরা তাদের বিচার চাই।’’

জীবেশ বাড়ৈ গ্রাম পুলিশদের পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘গ্রাম পুলিশ দুজন পাটগাতী থেকে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিজন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাদের পরিচয় জানার পর লোকজন বকাঝকা করেছে কিন্তু তাদের পেটানো হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’’

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাকি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

অন্যদিকে, এ ঘটনায় জীবেশ বাড়ৈকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপি। উপজেলা বিএনপি সভাপতি শেখ সালাহ উদ্দীন আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাবলু স্বাক্ষরিত নোটিশে তাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।