ঠাকুরগাঁওয়ে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করে আলোচনায় এসেছেন তিন বন্ধু। যৌতুকপ্রথা সমাজের জন্য ব্যধি বুঝতে পারার পর থেকেই স্বপ্ন ছিল তারা যৌতুক ছাড়া বিয়ে করবেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে এ স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাদের। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান মহাবিদ্যালয় মাঠে তাদের বিয়ের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল রিলিফ ট্রাস্ট ও ওয়েলবিং বাংলাদেশ সোসাইটি।
এ দিন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার গন্ডগ্রামের মোশারফ হোসেনের সঙ্গে পীরগঞ্জ উপজেলার একান্নপুর গ্রামের উম্মে কুলসুম, রাণীশংকৈল উপজেলার চন্দনচট গ্রামের আব্দুল্লা হিল বাকির সাথে প্রতিবেশী যদুয়ার গ্রামের সানজিদা আক্তার নুরানী এবং পঞ্চগড় জেলার মাগুড়া গ্রামের রুহুল আমিনের সাথে বোদা উপজেলার সালগ্রামের ফারজিনা আক্তারের বিয়ে হয়।
চিলারং ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার আব্দুল কাদের জানান, এই প্রথম যৌতুক ছাড়া তিনটি বিয়ে একসঙ্গে রেজিষ্ট্রি করলাম। এর আগে অনেক বিয়েতে যৌতুক নিয়ে ঝগড়া-এমনকি বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা চোখের সামনে ঘটেছে। তিন বন্ধুর উদ্যোগ-ইচ্ছা সত্যি প্রশংসনীয়।
দাতা সংস্থা জিআরটির প্রতিনিধি মুফতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘‘তিন বন্ধু যৌতুকবিহীন বিয়ের ইচ্ছা পোষণ করেছিল। আমরা তাদের বিয়ের যাবতীয় আয়োজন করেছি। সংস্থার পক্ষ থেকে উপহার দেওয়া হয়েছে নব দম্পতিকে।’’
যদি কেউ যৌতুক বিহীন বিয়ের ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে এমন আয়োজন করবেন বলে জানান তিনি।
বর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় যৌতুক বিহীন করে করার স্বপ্ন ছিল। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে মহান আল্লাহ। পাশাপাশি আমার দুই বন্ধুও আমার সাথে বিয়েতে বসেছে। কনেপক্ষের লোকজনও খুব খুশি এমন উদ্যোগে। আমরা দোয়া চাই আমাদের তিন বন্ধু ও তাদের সহধর্মিণীর জন্য।’’
অভিভাবকরা জানান, ছয়টি পরিবারের সিদ্ধান্তে এমন বিয়ে হচ্ছে। তাদের পরিবারগুলোতে যৌতুক বিহীন বিয়ে এর আগেও হয়েছে। পরবর্তীতে যারা বিয়ে করবেন, তারা সকলেই যৌতুক মুক্ত বিয়ে করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বিয়ে দেখতে এসেছিলেন বৃদ্ধ সহির উদ্দীন। তিনি জানান, ৫৫ বছরে একসঙ্গে তিনজনের বিয়ে সরাসরি দেখেননি। তাও আবার যৌতুক ছাড়া বিয়ে! এটা মহৎ দৃষ্টান্ত বলেন তিনি।