বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “দেশের এই মুহূর্তের প্রধান প্রয়োজন নির্বিঘ্ন, অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার পরিবেশ নিশ্চিত করা। মহান বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক সব ধরনের বিভাজন ও হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। এ উপলক্ষে তিনি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেছা ও অভিনন্দন জানান এবং তাদের জীবন সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক এই কামনা করেন।”
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী মা-বোনদের প্রতিও সশ্রদ্ধ সালাম জানান।
তারেক রহমান বলেন, “১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর পরাজয় ঘটে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। তাই ১৬ ডিসেম্বর জাতির গৌরব, অহংকার ও আত্মত্যাগের এক মহাকাব্যিক দিন।”
তিনি অভিযোগ করেন, “শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের যে প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা বারবার ফ্যাসিস্ট শাসনের দুঃশাসনে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। সংবাদপত্রসহ বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা দমন করা হয়েছে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “একের পর এক প্রহসনের একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে জনমতকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। বিরোধী মত দমনে গুম, খুন ও মিথ্যা মামলার মাধ্যমে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করা অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল।”
তারেক রহমান বলেন, “ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে ২৪-এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে এক নিষ্ঠুর একনায়কের পতন ঘটে। এর ফলে দেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করাই সময়ের দাবি।”
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করে তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি ঐক্য, সহনশীলতা ও মানবিকতার আহ্বান জানান। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক— বিভাজন ও হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকা।