ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের জন্য তার সরকারকে উৎখাত করে একটি পুতুল সরকার বসানোর চেষ্টা করছে। তিনি ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক হুমকি ও তেল অবরোধকে ‘বর্বরতার কূটনীতি’ আখ্যা দিয়ে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। খবর রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক টেলিভিশন ভাষণে মাদুরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র কারাকাসে একটি ‘পুতুল সরকার’ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা ‘৪৭ ঘণ্টাও টিকবে না।” তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ প্রয়োগের এই কৌশলকে ‘যুদ্ধংদেহী’ হিসেবে অভিহিত করেন। মাদুরোর দাবি, এই তৎপরতার মূল লক্ষ্য হলো ভেনেজুয়েলার সংবিধান, সার্বভৌমত্ব এবং প্রাকৃতিক সম্পদ দখল করা।
তার মতে, এই উদ্দেশ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ানে যুদ্ধজাহাজ ও নিউক্লিয়ার সাবমেরিন মোতায়েন করেছে এবং ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করছে।
মাদুরোর এই বক্তব্য এমন সময় এলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী তেলের ট্যাঙ্কারগুলোর ওপর অবরোধ ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা সরকারকে একটি ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার ও মার্কিন সম্পদ ‘চুরি’ করার অভিযোগ তুলেছেন।
গত মঙ্গলবার ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ভেনেজুয়েলা দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম নৌবহর দিয়ে ঘেরাও হয়ে আছে। তাদের সঙ্গে এমন কিছু ঘটবে যা তারা আগে কখনো দেখেনি।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই অবরোধের মুখে মাদুরো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলার তেল বাণিজ্য ও রপ্তানি অব্যাহত থাকবে। তিনি দাবি করেন, আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের সনদ নৌচলাচল ও বাণিজ্যের স্বাধীনতা রক্ষা করে। তিনি বলেন, “এটি জলদস্যুতা বা দস্যুবৃত্তির সময় নয়।”
ভেনেজুয়েলার সম্পদ কেবল তার জনগণের এই মন্তব্য করে মাদুরো আঞ্চলিক দেশ বিশেষ করে কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “ভেনেজুয়েলার আত্মরক্ষার আইনি অধিকার এবং রাজনৈতিক শক্তি উভয়ই রয়েছে। ভেনেজুয়েলা শক্তি, সত্য এবং শান্তির প্রতি ভালোবাসা নিয়ে তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।”