বিনোদন

প্রযোজকের জঘন্য ব্যবহার, পারিশ্রমিক না পাওয়া নিয়ে অকপট রাধিকা

বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। ২০০৩ সালে মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন। মঞ্চ থেকে তার ডাক পড়ে বড় পর্দায়। এরই মাঝে টিভি নাটকেও এন্ট্রি নেন এই অভিনেত্রী। তারপর অনেক দর্শকপ্রিয় ও ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তবে চলচ্চিত্রে পা রেখেই ‘ভয়ংকর’ অভিজ্ঞতার শিকার হন রাধিকা আপ্তে। 

২০০৫ সালে ‘বাহ’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে রাধিকা আপ্তের। এ সিনেমা পরিচালনা করেন অভিনেতা মহেশ মাঞ্জরেকর। সিনেমাটিতে কাজ করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা সঞ্জয় করেন রাধিকা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।   

প্রযোজকদের ‘ভয়ংকর’ বলে মন্তব্য করেন রাধিকা। তার ভাষায়, “ভয়ংকর প্রযোজকরা আমাদের থাকার ব্যবস্থা করেননি, পারিশ্রমিকও দেননি। আমি আর আমার মা যখন তাদেরকে চুক্তিপত্রে সই করার কথা বলি, তখন তারা বলেন, ‘আরে, উর্মিলা মাতন্ডকরও তো চুক্তিতে সই করেননি।’ যদিও আমি জানি না উনি চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন কি না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে তারা খুব জঘন্য ব্যবহার করেছিলেন। তবে মহেশ মাঞ্জরেকরের ব্যবহার দারুণ ছিলেন। এ কারণে আমি এই সিনেমার কথা ভুলে থাকতে চাই। আর এ বিষয়টি আমি খোলামেলাই বলে থাকি!” 

অভিষেক সিনেমার এই অভিজ্ঞতা রাধিকার মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলেছিল। আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি না থাকা, অপেশাদার আচরণের স্মৃতি রাধিকার উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। ক্যারিয়ারের শুরুতে এ ধরনের অব্যবস্থা ও অসম্মান তাকে ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা দিয়েছিল বলেও জানান এই অভিনেত্রী। 

সিনেমাটিতে একটি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাধিকা। কীভাবে সিনেমাটিতে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন? এ প্রশ্ন রাখা হলে রাধিকা আপ্তে বলেন, “আমি তখন ‘ব্রেন সার্জন’ শিরোনামে একটি নাটকে (মঞ্চনাটক) অভিনয় করছিলাম। নাটকটি খুব ভালো ছিল। এ নাটকের জন্য রাজ্যের একটি প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতেছিলাম। মহেশ মাঞ্জরেকর সেই প্রতিযোগিতার একজন বিচারক ছিলেন। নাটকটি দেখার পর আমাকে ফোন করে তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে কাস্ট করতে চাই।’ এ সিনেমার পর অনেকদিন আর কোনো সিনেমায় অভিনয় করিনি। কলেজ জীবন শেষ করি, তারপর অনেক পরে আবার সিনেমায় ফিরি। ফলে এই সিনেমাটিকে আমি আমার ক্যারিয়ারের অংশ হিসেবে বিশেষভাবে ধরি না। তবে হ্যাঁ, ক্যারিয়ারের দুই দশক তো হয়ে গেল।” 

অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে অনেকবারই জানিয়েছেন, শরীর নিয়ে তার ছুতমার্গ নেই, চরিত্রের প্রয়োজনে নিরাভরণ হতেও সমস্যা নেই তার। তাই বাংলা সিনেমা ‘অনুরণন’-এর পর নানা ধরনের হিন্দি সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। ‘পার্চড’, ‘ম্যাডলি’, ‘সিস্টার মিডনাইট’ প্রভৃতি সিনেমায় অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করে আলোচনায় উঠে আসেন।  

লন্ডনে নাচ শিখতে গিয়ে ২০১১ সালে ব্রিটিশ ভায়োলিন বাদক ও সংগীতজ্ঞ বেনেডিক্ট টেলরের সঙ্গে রাধিকার পরিচয় হয়; যা প্রেমে রূপ নেয়। দীর্ঘ সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর ২০১২ সালে বিয়ে করেন এই জুটি। বিয়ের ১২ বছর পর অর্থাৎ গত বছরের ডিসেম্বরে মা হন রাধিকা। 

গত কয়েক বছর ধরেই কাজ কম করছেন রাধিকা। চলতি বছরে তার অভিনীত দুটো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। বছরের শুরুতে মুক্তি পায় ‘লাস্ট ডেস’, বছর শেষে মুক্তি পায় ‘সালি মোহব্বত’ সিনেমা। আপাতত নতুন কোনো সিনেমার কাজ হাতে নেননি এই অভিনেত্রী।