ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে দলটির জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস এবং সদর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মাসুমের বাড়িতে হামলা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা কনক কান্তি দাসের বাড়ির আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করেন।
এলাকাবাসী জানান, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মধ্যরাতে ঝিনাইদল শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় শহরের শেরে বাংলা সড়কের হামদহ এলাকায় কনক কান্তি দাসের বাড়িতে ভাঙচুর চালান তারা। এক পর্যায়ে বাড়ির আসবাবপত্র বাইরে এনে অগ্নিসংযোগ করেন।
হামলার সময় কনক কান্তি দাসের বাড়িতে ছিলেন তার ভাই গোপাল কৃষ্ণ দাস। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন শতাধিক লোকজন। এক পর্যায়ে তারা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। পরে তারা আসবাবপত্র বের করে বাড়ির সামনে অগ্নিসংযোগ করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অবস্থা বেগতিক দেখে গোপাল কৃষ্ণ দাস পেছনের দরজা দিয়ে বাড়ি থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কিছুক্ষণ পরেই জেলা শহরের নতুন হাটখোলা সড়কের পাশে ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। মিজানুর রহমান মাসুম ঝিনাইদহ সদর পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২৪ এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর কনক কান্তি দাস স্বপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে স্বপরিবারে ভারতের অবস্থান করছেন।
এদিকে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে যায়। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতা মধ্যরাতে মিছিল বের করে। পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সাভাবিক রয়েছে।