রাজনীতি

চলমান সহিংসতার মধ্যে দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বিএনপির

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  ফ্যাসিবাদের নতুন সংস্করণের অংশ হিসেবে এসব হামলা চালানো হয়েছে। বর্তমান চলমান সহিংসতা ও নৈরাজ্যের মধ্যে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। যে ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্জিত হয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফ করেন মির্জা ফখরুল। বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন,  “অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছি। কিন্তু একটি মহল ফ্যাসিবাদের নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চায়। সরকারের নাকের ডগায় এসব কাজ করে যাচ্ছে তারা, যার ফলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিচারের দাবি করছি।”

তিনি সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গতকাল রাতে দুটি পত্রিকা অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়েছে, যা কর্মরত সাংবাদিকদের জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। দেশের প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা করা হয়েছে, যিনি জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এছাড়া ছায়ানটসহ কয়েকটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে।”

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হামলা, উত্তরা ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা এবং ময়মনসিংহে এক যুবককে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “এসব হামলা প্রমাণ করে একটি পুরোনো মহল দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চায়। আমরা এই ঘৃণিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।”

তিনি আরো বলেন, “জাতীয় সংসদ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করার চেষ্টা চলছে। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সবাইকে হুঁশিয়ার করতে চাই যে, এই ঘৃণিত কাজ রুখে দিতে হবে।”

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সাংগঠনিক বিষয়াবলি এবং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুসংক্রান্ত বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।