আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘জলদস্যুতার’ অভিযোগ ভেনেজুয়েলার

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আবারো বিশাল তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে ‘জলদস্যুতা’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কারাকাস। ঘটনাটিকে গুরুতর অপরাধ আখ্যা দিয়ে বিষয়টি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলে তোলার ঘোষণা দিয়েছে ভেনেজুয়েলা সরকার।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ভেনেজুয়েলার উপকূলে আরো একটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভেনেজুয়েলা। কারাকাস অভিযোগ করেছে, এটি ভেনেজুয়েলার সরকারকে উৎখাত করার এবং দেশটির বিশাল জ্বালানি সম্পদ দখলের একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।

ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনেজুয়েলার তেল বহনকারী ট্যাংকার আটকের ঘটনাটিকে ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ ও ‘চুরি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। একইসঙ্গে মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জাহাজের ক্রুদের ‘গুম’ করার অভিযোগও করেছে।

কারাকাস জানিয়েছে, এই আটকের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্ব ও প্রাকৃতিক সম্পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনের একটি ‘ঔপনিবেশিক মডেলের’ অংশ।

ভেনেজুয়েলা বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘সাম্রাজ্যবাদী আচরণ’ ও ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের’ বিরুদ্ধে বিদ্যমান সব আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে অভিযোগ জানাবে। একই সঙ্গে সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে কারাকাস।

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম শনিবার ভোরে এক অভিযানের মাধ্যমে ট্যাংকারটি আটকের ঘোষণা দেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি বন্ধের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর কয়েক দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতাযাত করা ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ ট্যাংকারগুলোর ওপর ‘সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ’ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে একটি ‘পুতুল সরকার’ বসানোর চেষ্টার অভিযোগ আনেন। তিনি মার্কিন অবরোধ ও ট্যাংকার আটকের ঘটনাকে ‘জলদস্যু কৌশল’ ও ‘বর্বরতার কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করেন।

ট্রাম্প খোলাখুলিভাবে এই সংঘাতের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার তেলের সম্পর্ক টেনেছেন। তার দাবি, ভেনেজুয়েলা মার্কিন জ্বালানি সম্পদ ‘চুরি’ করেছে। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ওই সম্পদ ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ভেনেজুয়েলাকে ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ নৌবহরের’ মুখোমুখি হতে হবে।

এদিকে রাশিয়া ও চীন উভয়েই সতর্ক করেছে যে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ও জাহাজ আটকের এই ঘটনাগুলো বৃহত্তর অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। দেশ দুটি সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।