ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির জন্য দোয়া এবং ভারত বিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের বাদুড়িয়া গ্রামের মোড়লপাড়া জামে মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি সঠিক নয়।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে নিজেই এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মসজিদের ইমাম মেহেদী হাসান নিজেই।
ইমাম মেহেদী হাসান বলেন, “আমি মসজিদেই আছি। ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।”
একটি বিষয় নিয়ে একজন মুসল্লির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি ও কথা কাটাকাটি হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন তিনি। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ফিতনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি এই ইমামের।
প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ করে ইমাম মেহেদী হাসান জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর জুমার নামাজের আগে তিনি শহীদ শরীফ ওসমান হাদী ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া করার ঘোষণা দেন। নামাজ শেষে তবিবুর রহমান মোড়ল নামে একজন মুসল্লি বিষয়টিকে ‘দলীয় এজেন্ডা’ হিসেবে উল্লেখ করে তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন ইমাম জানান, এটা কোনো দলীয় এজেন্ডা নয়, একজন আলেম হিসেবে তার জন্য দোয়া করা দোষের কিছু না। এভাবে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসা হয় এবং শরীফ ওসমান হাদি ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবসহ সবার জন্য দোয়া করা হয়। বিষয়টিকে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মসজিদ কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান মোড়লের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ করেন তার স্ত্রী। তিনি জানান, তার স্বামী ফোন রেখে বাইরে গেছেন। যে কারণে আমিনুর রহমানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়- মোড়ল পাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জন্যে দোয়া করায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ইমামকে ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যায় এবং তাকে চাকরিচ্যুত করে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী খুবই মর্মাহত এবং সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মসজিদের মুসল্লি মো. মাসুম বিল্লাহকে অভিযোগ করে বলতে শোনা যায়, ইমাম নামাজের আগে শহীদ শরিফ ওসমান হাদীর জন্য দোয়ার ঘোষণা দেন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী তবিবুর মোড়ল, আসাফুর মোড়ল ও নাজমুল মোড়লসহ কয়েকজন তার কাছে জানতে চান- এ কথা বলতে তাকে কে অনুমতি দিয়েছে? তখন ইমাম এটি রাষ্ট্রীয় ঘোষণা বলে উল্লেখ করেন। এতে ওই ব্যক্তিরা ইমামের ওপর চড়াও হন, এমনকি মারমুখী আচরণ করেন। এক পর্যায়ে তারা ইমামকে চাকরিচ্যুত করে মসজিদ থেকে বের করে দেন।