পারিবারিক আয়োজনে আসিফ সালাহউদ্দিন মালিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। তারপর সংসারেই ডুবেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। কারণ অভিনয়ে তাকে আর দেখা যায়নি বললেই চলে! বিয়ের এক দশক পর বিন্দু জানালেন, তার সংসার ভেঙে গেছে।
মাছরাঙা টেলিভিশনের জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘বিহাইন্ড দ্য ফেইম উইথ আরআরকে’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বিয়ে-সংসার নিয়ে কথা বলেন বিন্দু। এ আলাপচারিতায় সঞ্চালক সরাসরি বিন্দুর কাছে জানতে চান, আপনার কি বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে? জবাবে বিন্দু বলেন, “হ্যাঁ। আমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।” কবে হয়েছে? পাল্টা প্রশ্ন শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন বিন্দু। তারপর বলেন, “২০২২ সালে।”
এখনো অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন আপনারা বিবাহিত কি না। এসব নিয়ে অনেকে পেছনে কথা বলেন। অনেকে আবার আপনাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করছে। সেখানে লেখা হচ্ছে—“বিন্দুর স্বামী।” কিন্তু আরেক পক্ষ বলছেন, “বিন্দুর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে আপনি আনুষ্ঠানিক কিছু জানাননি।
বিয়ের সাজে বিন্দু ও আসিফ
সঞ্চালকের এসব কথা শেষ হওয়ার পর বিন্দু বলেন, “হ্যাঁ, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাইনি। এ কারণে অনেকে দ্বিধাগ্রস্ত। অনেকে হয়তো জিজ্ঞাসা করেন না, যদি অস্বস্তি বোধ করি! বড় সংখ্যক মানুষ মনে করেন, ‘আমি বিবাহিত’। কিন্তু আমি বিবাহিত নই। আমার সংসারের যে জার্নি সেটা অনেক ছোট ছিল। মাঝখানে অনেক বড় একটি সেপারেশন গিয়েছে।”
এরপর বিন্দুকে থামিয়ে সঞ্চালক জানতে চান, কবে থেকে আলাদা থাকছিলেন? জবাবে বিন্দু বলেন, “২০১৭ সাল থেকে।” আপনারা আলাদা হলেন কেন? জবাবে বিন্দু বলেন, “আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় অনেক বড় বড় ঘটনা থাকে, কারণ থাকে। আবার অনেক সময় অনেক কারণও দরকার হয় না। এখানে আরেকজন মানুষের জীবন জড়িত। আমি চাই না, বিচ্ছেদের কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে উনাকে কোনো বিব্রতকর জায়গা ফেলি! সেইটুকু সম্মান আমি দিতে জানি।”
আফসান আরা বিন্দু
“আমার বাবা-মা সবসময়ই বলেছেন—‘জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে আল্লাহর হাতে’। পারিবারিক আয়োজনে আমার বিয়ে হয়েছিল। আমার বাবা-মা, পরিবার দেখে-শুনে আমার বিয়ে দিয়েছিলেন।” বলেন বিন্দু।
এ কথা শেষ করেই সঞ্চালকের উদ্দেশ্যে বিন্দু বলেন, “আমি জানি আপনি আমাকে প্রশ্ন করবেন, কাজ কেন ছেড়েছি?” বিন্দুর কথায় সম্মতি জানিয়ে সঞ্চালক বলেন, “সত্যি আমি এই প্রশ্ন করতে যাচ্ছিলাম। ২০১৪ সালের অক্টোবরে আপনি বিয়ে করেন। তার কয়েক মাস আগে থেকে আপনি কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কাজ ছাড়ার পেছনে কারো কোনো চাপ ছিল?”
আফসান আরা বিন্দু
আফসান আরা বিন্দু বলেন, “কোনো চাপ ছিল না। আপনি তো জানেন আমি মাসে ৩০ দিন কাজ করতাম। সিঙ্গেল নাটক করতাম। সিরিয়ালে কখনো যুক্ত ছিলাম না। সিরিয়ালে যুক্ত থাকলে সিঙ্গেল নাটকের কাজ মিস হয়ে যেত। সে জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে, একজন সাধারণ মানুষ যেভাবে জীবনযাপন করেন, আমি সেভাবে করতে পারিনি। পাবলিক প্লেসে যেতে পারিনি। পারিবারিক বা মামা-কাকাদের বাচ্চাদের জন্মদিনেও যেতে পারিনি। এখান থেকে মনে হয়েছে, আমি যদি সংসারে যাই, তাহলে আন্তরিকভাবে আমার সময়টা ওখানে ইনভেস্ট করতে চাই। আমার মনে হয়, এটা সব মেয়ের ক্ষেত্রেই ঘটে। কাজ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি।”
২০১৪ সালের অক্টোবরে বিয়ের পর ঘোষণা দিয়ে মিডিয়া ছাড়েন বিন্দু। মিডিয়ার আলোকচ্ছটা থেকে দূরে থাকা এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিনের আড়াল ভেঙে ২০১৯ সালে হঠাৎ আবির্ভুত হন রাজধানীর এক ম্যারাথনে। তারপর অভিনয়ে যেমন পাওয়া যায়নি, তেমনি মিডিয়ার কোনো অনুষ্ঠানেও তার দেখা মিলেনি। তবে ২০২২ সালে ‘উনিশ২০’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেন বিন্দু। সিনেমাটিতে শুভর বিপরীতে অভিনয় করেন। অবশ্য, এরপর অভিনয়ে নিয়মিত হননি এই অভিনেত্রী।
আফসান আরা বিন্দু
২০০৬ সালের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ নির্বাচিত হন আফসান আরা বিন্দু। ‘দারুচিনি দ্বীপ’ শিরোনামের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন। এরপর ‘জাগো’, ‘পিরিতের আগুন জ্বলে দ্বিগুণ’, ‘এই তো প্রেম’ সিনেমায় অভিনয় করেন। ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় টিভি নাটক উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।