যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন। ওই অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান তৎপরতার কথা উল্লেখ করে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “জাতীয় সুরক্ষার জন্য আমাদের গ্রিনল্যান্ড দরকার।” মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ডেনমার্ক (যারা এই আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি শাসন করে) সেখানে পর্যাপ্ত সামরিক সুরক্ষা দিতে পারছে না।
লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রি-কে গ্রিনল্যান্ড বিষয়ক ওয়াশিংটনের ‘বিশেষ দূত’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর ট্রাম্প এসব কথা বললেন। ট্রাম্প ল্যান্ড্রিকে একজন ‘চমৎকার ব্যক্তি’ এবং ‘চুক্তি করতে দক্ষ ব্যক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমাদের গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য, খনিজ সম্পদের জন্য নয়।”
তিনি আরো যোগ করেন, “আপনি যদি গ্রিনল্যান্ডের দিকে তাকান এবং এর উপকূলরেখা পর্যবেক্ষণ করেন, তবে দেখবেন সেখানে রাশিয়া ও চীনের জাহাজ সবখানে ছড়িয়ে আছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের এটি দরকার। আমাদের এটি পেতেই হবে। গ্রিনল্যান্ড একটি বড় বিষয়।”
এদিকে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন এবং গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুয়ুক থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইয়েন্স-ফ্রেডেরিক নিলসেন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ড তার জনগণের।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আপনি অন্য একটি দেশকে দখল বা সংযুক্ত করতে পারেন না। এমনকি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার অজুহাত দিয়েও তা সম্ভব নয়। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডবাসীদের সম্পদ এবং যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড দখল করতে পারবে না।”
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লারস লোকে রাসমুসেন বলেছেন, জেফ ল্যান্ড্রিকে দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যার জন্য তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ এ. হাওরিকে তলব করবেন।
এদিকে, ল্যান্ড্রি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি এই পদে কাজ করাকে সম্মানের বলে উল্লেখ করেন এবং জানান যে, এই দায়িত্ব পালনের ফলে লুইজিয়ানার গভর্নর হিসেবে তার কাজ ব্যাহত হবে না।
সাবেক ডেনিশ উপনিবেশ গ্রিনল্যান্ড ১৯৭৯ সালে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে এবং এটি ডেনমার্ক কিংডমের অংশ হিসেবেই রয়ে গেছে। ২০০৮ সালে গ্রিনল্যান্ডের মানুষ একটি গণভোটের মাধ্যমে স্ব-শাসন আইন অনুমোদন করে, যা ২০০৯ সালের জুন থেকে কার্যকর হয়। এই আইনের ফলে গ্রিনল্যান্ড অনেক বেশি স্বায়ত্তশাসন পেলেও এর পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে থাকে।