আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে টাঙ্গাইলের আসনগুলোতে প্রার্থী ও ভোটাররা নানা জল্পনা কল্পনা শুরু করেছেন। প্রার্থীদের কাছে উন্নয়নসহ নানা দাবি তুলে ধরছেন ভোটাররা। নির্বাচনে জিততে প্রার্থীরাও দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত জেলার সাতটি আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ দলটির ১৪ জন নেতাকর্মী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নির্বাচন কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলা নিয়ে আটটি সংসদীয় আসন। গত বুধবার থেকে সারাদেশেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, এনসিপি, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন। এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি সমর্থন করেন আফিফ উদ্দিন আহমাদ মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তার দলীয় কোনো পদ নেই। এই আসনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আসাদুল ইসলাম আজাদ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম ওবায়দুল হক নাসির। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী লুৎফর রহমান আজাদ ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. লুৎফর রহমান মতিন। এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল ও সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সৈয়দ খালেদ মোস্তফা।
টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন নাগরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আওয়াল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. ইকবাল হোসেন খান, ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান। বিএনপির সমর্থক জুয়েল সরকারও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে, তার দলীয় কোনো পদ পদবি নেই।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ সোরহাব ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক দিপু হায়দার খান। মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ফিরোজ হায়দার খান।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে মনোয়ন পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির মনোনয়ন চাওয়া সালাউদ্দিন আলমগীর রাসেল ও হাবিবুর রহমান কামাল। সালাউদ্দিন আলমগীরের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। এছাড়া সালাউদ্দিন আলমগীরের সহযোগী হিসেবে হাবিবুর রহমান কামাল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এই আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান।
প্রাথমিক মনোনয়ন না পাওয়া টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, “দল থেকে এখনো চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমি আশা করি, দল নির্বাচনে চূড়ান্ত মনোনয়ন আমাকে দেবে। যদি না দেয়, সেই ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতা ও সদরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন, “দল যাদের মনোনয়ন দিয়েছে, তাদের জন্য আমরা কাজ করছি। কেউ যদি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”