রাজনীতি

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে ৪ আসনে বিএনপির সমঝোতা

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে ৪টি আসনে সমঝোতা করেছে বিএনপি। এই সমঝোতার ফলে নির্ধারিত ৪টি আসনে বিএনপি নিজস্ব প্রার্থী না দিয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থীদের সমর্থন দেবে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নীলফামারী-১ আসনে মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নুর হোসেন কাসেমী, সিলেট-৫ আসনে ওবায়দুল্লাহ ফারুক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জুনায়েদ আল হাবিব জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সিদ্ধান্ত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে এবং তা অপরিবর্তনীয়। তিনি বলেন, “দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ বরদাশত করা হবে না।”

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র উত্তরণের একটি সংবেদনশীল সময় চলছে। এই সময়কে বাধাগ্রস্ত করতে একটি গোষ্ঠী নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সরকারকে আরো কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা একটি রাজনৈতিক বাস্তবতার অংশ। তিনি বলেন, “যেসব আসনে জমিয়তের প্রার্থীদের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেখানে বিএনপি কোনো প্রার্থী রাখবে না। এই সমঝোতা নির্বাচনের আগে এবং পরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।”

এদিকে, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আমির ও সিলেট-৫ আসনের প্রার্থী ওবায়দুল্লাহ ফারুক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য বিএনপি সবচেয়ে আস্থাভাজন রাজনৈতিক শক্তি। তিনি বলেন, “অন্য অনেক রাজনৈতিক জোটের রাষ্ট্র পরিচালনার বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। বিএনপি তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ভবিষ্যতেও বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে- এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগে বিএনপির এই আসনভিত্তিক সমঝোতা বিরোধী জোটের ভেতরে সমন্বয় ও ঐক্য জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ে ভোট বিভাজন রোধ এবং নির্বাচনী কৌশল বাস্তবায়নে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সমঝোতা ও আসনভিত্তিক সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে এই ৪ আসনের সমঝোতা সেই ধারাবাহিকতারই অংশ।