আন্তর্জাতিক

গাজায় ৮৭৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল: মিডিয়া অফিস

গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৪১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ হাজার ১১২ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস জানায়, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির ৮৭৫টি ইসরায়েলি লঙ্ঘন নথিবদ্ধ করেছে।

এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোর ২৬৫টি ঘটনা, আবাসিক এলাকায় ৪৯টি সামরিক অনুপ্রবেশ, ৪২১টি গোলাবর্ষণ এবং ১৫০টি ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে যে, ইসরায়েল চুক্তির অধীনে তাদের মানবিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। চুক্তিতে ৪২ হাজার ৮০০ ট্রাক সাহায্য পাঠানোর কথা থাকলেও প্রবেশ করেছে মাত্র ১৭ হাজার ৮১৯টি।

বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী যেখানে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে গড়ে যাচ্ছে ২৪৪টি ট্রাক (মাত্র ৪১ শতাংশ বাস্তবায়ন)।

জ্বালানি সরবরাহও তীব্রভাবে সীমিত রয়েছে। যুদ্ধবিরতি  চুক্তির অধীনে সম্মত ৩ হাজার ৬৫০টি জ্বালানি ট্রাকের মধ্যে মাত্র ৩৯৪টি ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৫০টির বদলে মাত্র ৫টি ট্রাক ঢুকেছে, যা চুক্তির মাত্র ১০ শতাংশ।

বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস সতর্ক করে বলেছে, এই জ্বালানি ঘাটতির কারণে হাসপাতাল, বেকারি এবং পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ‘প্রায় সম্পূর্ণ অকেজো’ হয়ে পড়েছে, যা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে তীব্রতর করেছে।

মিডিয়া অফিসটি গাজায় শীতকালীন একটি ‘নজিরবিহীন মানবিক সংকট’ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল তাঁবু, মোবাইল হোম, ক্যারাভান এবং অন্যান্য আশ্রয়ের উপকরণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিধিনিষেধগুলো ‘চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন’।

বিবৃতি অনুসারে, ইসরায়েলের ‘স্বেচ্ছাচারী নীতি’ কারণে সাম্প্রতিক শীতকালীন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬টি ভবন ধসে পড়েছে, যার ফলে ১৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

অফিসটি মধ্যস্থতাকারী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে মানবিক সহায়তা ও জ্বালানির নিরাপদ প্রবাহ নিশ্চিত করার এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুসারে আশ্রয়ের উপকরণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

মিডিয়া অফিস বলেছে, গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় এই ধরনের পদক্ষেপ অপরিহার্য।