অর্থনীতি

দুর্গতির পুঁজিবাজারে সুগতির চেষ্টায় বছর শেষ

দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। এ অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও আস্থার সংকট তৈরি করেছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবার প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন মেলেনি। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপেও গতি ফিরে পায়নি পুঁজিবাজার।

ফলে চলতি বছরে পুঁজিবাজারে ধরাবাহিকভাবে সূচক, লেনদেন, মূলধন কমেছে। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী। পূঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে দেখা গেছে অনেক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি।

তবে বছরজুড়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন, শৃঙ্খলা ফেরানো, অসদাচরণ রোধ, নজরদারির আধুনিকায়ন, সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের চেষ্টা করাসহ আইনকানুন সংশোধন এবং আধুনিকায়নের কাজ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)। 

একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স বিএসইসির কাছে বেশ কিছু সুপারিশ জমা দিয়েছে। আর সেসব সুপারিশ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করছে বিএসইসি।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, পুঁজিবাজারের এই সংকট দীর্ঘদিনের, যার সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত, কার্যকরী ও যুগোপযোগী সংস্কার। এর বাস্তবায়ন রাতারাতি করা সম্ভব না হলেও সব অংশীজনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পুঁজিবাজারে সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

গত এক বছরের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ২১৮.১৫ পয়েন্টে। আর ১৮ ডিসেম্বর তা অবস্থান করে ৪ হাজার ৮৩১.৪১ পয়েন্টে। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৩৮৬.৭৪ পয়েন্ট বা ৭.৪১ শতাংশ। 

এদিকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম‌্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার দিন অর্থাৎ ২০২৪ সালেল ১৯ আগস্ট  ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ৭৭৫.৪৯ পয়েন্টে। তার কাজে যোগদানের পর থেকে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৯৪৪.০৮ পয়েন্ট বা ১৬.৩৪ শতাংশ। 

তবে চলতি বছরের ২৮ মে ডিএসইএক্স সূচক সর্বনিম্ন কমে দাঁড়িয়েছিল ৪ হাজার ৬১৫.৪০ পয়েন্টে; যা গত ৫ বছরের  মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। 

অবশ্য চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স সূচক সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬৩৬.১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছিল।

২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস সূচক ছিল ১ হাজার ১৬৫.০৭ পয়েন্টে। আর চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিএসইএস সূচক অবস্থান করছে ১০০০.৮১ পয়েন্টে। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইএস সূচক কমেছে ১৬৪.২৬ পয়েন্ট বা ১৪.০৯ শতাংশ।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিএসইর ডিএস৩০ সূচক ছিল ১ হাজার ৯৪১.৯৩ পয়েন্টে। আর চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিএস৩০ সূচক কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৫৯.৮৫ পয়েন্টে। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক কমেছে ৮২.০৮ পয়েন্ট বা ৪.২২ শতাংশ।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ কোটি ৩২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। আর চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়ছে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৬ কোটি ৫৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১১ হাজার ৯৬১ কোটি ২৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা বা ১.৭৬ শতাংশ।

গত এক বছরের চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে,  ১ জানুয়ারি সিএসইর প্রধান সিএসপিআই সূচক ছিল ১৪ হাজার ৫১২.০৫ পয়েন্টে। আর ১৮ ডিসেম্বর তা অবস্থান করে ১৩ হাজার ৬২৪.৩৬ পয়েন্টে। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে সিএসপিআই সূচক কমেছে ৮৮৭.৬৯ পয়েন্ট বা ৬.১১ শতাংশ।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি সিএসইর সিএসইএক্স সূচক ছিল ৮ হাজার ৮৩৮.৬৩ পয়েন্টে। আর ১৮ ডিসেম্বর তা অবস্থান করছে ৮ হাজার ৪০৩.৬৪ পয়েন্টে। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে সিএসইএক্স সূচক কমেছে ৪৩৪.৯৯ পয়েন্ট বা ৪.৯২ শতাংশ।

২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর তা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ফলে প্রায় এক বছরের ব্যবধানে সিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ২০৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ০.১৭ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। চলতি বছরের ১১ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই নির্দেশনাগুলো দেন প্রধান উপদেষ্টা। 

নির্দেশনাগুলো হলো- সরকারের মালিকানা রয়েছে এমন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রুখতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার করা, পুঁজিবাজারে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং বড় ধরনের ঋণ প্রয়োজন এমন ব‍্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব‍্যাংকঋণ নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে আগ্রহী করে তোলার ব্যবস্থা নেওয়া।

পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সুপারিশ ২০২৪ বছরের ৭ অক্টোবর পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি। চলতি বছর বিএসইসির কাছে তারা মার্জিন রুলস, মিউচুয়াল ফান্ড ও আইপিও প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণসহ বেশ কিছু সুপারিশ জমা দিয়েছে। এসব সুপারিশ বাজারকে আরো স্বচ্ছ ও সুগঠিত করতে সাহায্য করবে বলে মনে করে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স।

পুঁজিবাজার সংস্কারে বিএসইসির গৃহীত পদক্ষেপ বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে ২০২৪ বছরের ১৯ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে মোটা দাগে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো হলো-

ইন্টারন্যাশনাল প্রাকটিস অনুযায়ী সেকেন্ডারি মার্কেটে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হয়েছে, যাতে বাজার নিজ গতিতে চলতে পারে। তবে কোনো অভিযোগ বা ম্যাল প্রাকটিস বা মিস কনডাক্ট হলে তখন তদন্ত করে দেখবে বিএসইসি।

পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং আস্থা ফেরাতে অনিয়ম-কারসাজি-দুর্নীতি অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটিকে ১২টি কার্যপরিধি দেওয়া হয়েছিল। বর্ধিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ চলতি বছরের গত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তারা সম্পূর্ণ প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছেন।

পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২৪ সালেরর ৭ অক্টোবর একটি বিশেষ পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সকে ১৭টি কার্যপরিধি দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে তারা সব সুপারিশ জমা দিয়েছে।

পুঁজিবাজারে সুশাসন ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তদন্তের ভিত্তিতে নানা অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বিশেষ করে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন হিসেবে জরিমানা করা হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে এ কমিশন।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, যেকোনো নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়েছে কমিশন, পুঁজিবাজারের নানাবিধ সমস্যা দ্রুত সমাধান ও প্রণোদনা বা সহায়তা পেতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে কমিশন, পুঁজিবাজারে ভালো মানের মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আনার লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে এবং দেশের রেগুলেটরগুলোর মধ্যে ইন্টারকানেকশন ও কো-অর্ডিনেশন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বধীন কমিশন।

বিএসইসির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর মধ‌্যে রয়েছে-

আইন ও বিধি-বিধান সংস্কার মার্জিন রুলস, মিউচুয়াল ফান্ড ও আইপিও রেগুলেশনস আধুনিকীকরণ এবং কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে আইন ও বিধি-বিধান সংস্কার করেছে বিএসইসি।

আইপিও প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার জন্য পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যা ইস্যু ম্যানেজারদের বিএসইসিতে সরাসরি আসা কমাবে।

নেগেটিভ ইক্যুইটির সমস্যা সমাধান নেগেটিভ ইক্যুইটির মতো বড় সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এই সংস্কারের মাধ্যমে বাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।

দ্রুত ডিভিডেন্ড পরিশোধের উদ্যোগ ডিভিডেন্ড পরিশোধে বিলম্ব এড়াতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে এজিএমের আগেই ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড একটি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হয়। কোম্পানির পর্ষদ সভার পর অথবা এজিএমের অন্তত এক দিন আগে ডিভিডেন্ডের টাকা আলাদা অ্যাকাউন্টে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা কোম্পানিগুলোকে সময়মতো ডিভিডেন্ড বিতরণে বাধ্য করে।

নতুন বাজেটের সুবিধা বিএসইসির সুপারিশে বিও অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ফি কমান (৪৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা), ব্রোকারদের টার্নওভার ট্যাক্স কমান (০.০৫ থেকে ০.০৩ শতায়শ) এবং তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট করের ব্যবধান বাড়ান (৭.৫০ শতাংশ) হয়েছে।

তদন্ত ও এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম বিএসইসি নিয়ম ভঙ্গ, আইপিও তহবিলের অপব্যবহার, ইনসাইডার ট্রেডিং ও মিউচুয়াল ফান্ডের অনিয়ম পাওয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

একীভূত ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক- একীভূত হওয়া এই পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

পুঁজিবাজারে আজীবন নিষিদ্ধ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা ও অসহযোগিতা করার অভিযোগে এলআর গ্লোবালের সিইও রিয়াজ ইসলাম, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সার্ভিল্যান্স সিস্টেম আপগ্রেড পুঁজিবাজারে অনিয়ম ও কারসাজি রোধে সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার বা সিস্টেমের হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার হালনাগাদকরণের (আপগ্রেড) মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে আগামীতে নজরদারিতে দুই-তিন গুণ সক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করে কমিশন।

নিবন্ধ বাতিল ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) বিধিমালা, ২০২০ অনুযায়ী নির্ধারিত শর্ত পূরণ না করায় আল হারামাইন সিকিউরিটিজ ও মাহিদ সিকিউরিটিজের সনদ বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বেক্সিমকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের স্টক-ডিলার ও ব্রোকার নিবন্ধন সনদ (ট্রেক- ১৭৮) নবায়ন করা হয়নি। কারণ প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদে থাকা সালমান এফ রহমান পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ থাকায় সনদ নবায়ন অনুমোদন করেনি বিএসইসি।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর উদ্যোগ দেশের পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জে স্বর্ণ, রুপা ও অপরিশোধিত পাম অয়েলের লেনদেন আগামী বছর থেকে পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করা হবে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৭ মে বিএসইসির ৯৫৬তম কমিশন সভায় ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (কমোডিটি ডেরিভেটিভস) প্রবিধানমালা-২০২৫’ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে এটি বাস্তবায়নের দ্বারে রয়েছে।