আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার দখলে এলো ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর সিভেরস্ক

ডিসেম্বরের ১১ তারিখে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সিভারস্ক শহর দখলের দাবি করেছিল রুশ বাহিনী। তবে সেসময় ইউক্রেন এর সত্যতা অস্বীকার করলেও, অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্বাঞ্চলীয় শহরটি বেদখল হওয়ার তথ্য জানিয়েছে। 

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনীয় বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে দোনেৎস্ক অঞ্চলের পূর্বদিকের শহর সিভারস্ক থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহারের তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই ঘটনা দনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতি জানান, ‘সৈন্যদের জীবন রক্ষা এবং ইউনিটের যুদ্ধ সক্ষমতা বজায় রাখতে’ এই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারাদের মতে, জনবল এবং সরঞ্জামের দিক থেকে রাশিয়ান বাহিনী ‘উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে’ ছিল। তারা খারাপ আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে ক্রমাগত ছোট ছোট ইউনিটে আক্রমণ চালিয়ে ইউক্রেনীয় সেনাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল।

যদিও শহরটি এখন রাশিয়ার দখলে, তবে ইউক্রেন দাবি করছে যে সিভারস্ক এখনও তাদের ‘ফায়ার কন্ট্রোল’ (আর্টিলারি সীমানা) এর মধ্যে রয়েছে। স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্কের মতো বড় শহরগুলোর দিকে রাশিয়ার অগ্রযাত্রা রুখতে ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখানে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

সিভারস্ক শহরটি আকারে ছোট হলেও, এটি দোনেৎস্কের উত্তরাঞ্চলের প্রতিরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, এই শহরটি বৃহত্তম স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক অঞ্চলগুলোকে রক্ষার ঢাল হিসেবে কাজ করত, যা রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জয় করতে পারেনি।

মনিটরিং সাইট ‘ডিপ স্টেট’-এর তথ্যানুসারে, রাশিয়ার বাহিনী সুমী অঞ্চলের সীমান্ত সংলগ্ন হ্রাবোভস্কে গ্রামটিও দখল করেছে।

রাশিয়ার আঞ্চলিক দাবির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা তিনটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের মধ্যে দোনেৎস্ক একটি, যা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর পথে বাধা। ইউক্রেনের নেতারা বলেছেন, তারা কোনোভাবেই মস্কোর দখলকৃত অঞ্চল মেনে নেবে না এবং দোনেৎস্ক সহ অন্যান্য দখলকৃত অঞ্চল মুক্ত করতে চায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ২৮-দফা শান্তি পরিকল্পনায় ক্রিমিয়া, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ককে ‘কার্যত রাশিয়ান’ হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে ইউক্রেনের নেতারা কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে রাজি নন।

যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে কয়েক মাস ধরে আলোচনা চালালেও বড় ধরনের অগ্রগতি হয়নি। একটি চূড়ান্ত শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে মার্কিন দূতরা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।