রাজনীতি

তারেক রহমানের সঙ্গে কে কে আসছেন, কর্মসূচি কী

দীর্ঘ দেড় যুগ পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ, কৌতূহল ও আবেগের সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রত্যাবর্তনকে শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে ফেরা হিসেবে নয়, বরং দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ও সর্বজনীন প্রত্যাশার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন অনেকেই।

এই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে উদ্ভূত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে এসব প্রশ্নের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন মাহাদী আমিন।

১. একই ফ্লাইটে তারেক রহমানের সঙ্গে পরিবারের কারা ফিরছেন?

#তারেক রহমানের সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে ফিরছেন তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।

২. তারা কখন ঢাকা পৌঁছাবেন?

#তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। অবতরণের পরপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ও প্রটোকল ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।

৩. দিনের কর্মসূচি কী কী?

#স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তারেক রহমানের প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার হলো এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার অসুস্থ মাতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়া।

জনগণের আবেগ ও প্রত্যাশার প্রতি সম্মান জানিয়ে, যাত্রাপথের মাঝামাঝি রাজধানীর ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট) এলাকায় তিনি অতিসংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দেশবাসীর উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাবেন। এরপর তিনি হাসপাতালে গিয়ে মায়ের পাশে থাকবেন এবং সেখান থেকে সরাসরি গুলশানে নিজ বাসভবনে যাবেন।

৪. ঐতিহাসিক স্থান বাদ দিয়ে ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ কেন নির্বাচন করা হলো?

#এই স্থান নির্বাচন করা হয়েছে জনদুর্ভোগ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার কৌশলগত ও মানবিক সিদ্ধান্ত থেকে। তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানীর কেন্দ্রীয় ও ঐতিহাসিক স্থান— যেমন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা মানিক মিয়া এভিনিউ ইচ্ছাকৃতভাবেই কর্মসূচির বাইরে রাখা হয়েছে।

পরিবর্তে শহরের প্রান্তে অবস্থিত প্রশস্ত ও দীর্ঘ ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’র একটি সার্ভিস লেনকে অতিসংক্ষিপ্ত গণঅভ্যর্থনার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

৫. এটি কি কোনো সংবর্ধনা অনুষ্ঠান?

#না। এটি কোনো জনসভা বা সংবর্ধনা নয়। এটি শুধু দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং দেশনেত্রীসহ সবার কল্যাণ কামনায় দোয়া চাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি। এখানে তারেক রহমানই একমাত্র বক্তা থাকবেন।

৬. জনভোগান্তি কমাতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?

#জনদুর্ভোগ কমাতে ঢাকাজুড়ে ২০টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। এসব ক্যাম্পে চিকিৎসক, প্যারামেডিক, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। বক্তব্যস্থলের কাছে ছয় শয্যার একটি অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতালও প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে আইসিইউ সুবিধাসম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্স সংযুক্ত থাকবে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ ও কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন।

৭. যানজট ও জরুরি চলাচল ব্যবস্থাপনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?

#রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে আলাদা বাস পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরগামী যাত্রী, বিদেশফেরত যাত্রী এবং রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে কাকলী মোড়, বিমানবন্দরের সামনে ও আব্দুল্লাহপুরে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে মোটরবাইক এসকর্টের ব্যবস্থাও থাকবে।

৮. ২৫ ডিসেম্বর তারিখটিই কেন নির্বাচন করা হলো?

#জনভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যেই সরকারি ছুটির দিন ২৫ ডিসেম্বরকে প্রত্যাবর্তনের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই দিনের পর আরো দুই দিন সরকারি ছুটি থাকায় টানা তিন দিনের অবকাশ সৃষ্টি হবে, যা যানজট ও নাগরিক চাপ কমাতে সহায়ক হবে।

৯. নেতাকর্মীদের জন্য কোনো নির্দেশনা আছে কি?

#এই প্রত্যাবর্তন যেন কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা বা নাগরিক দুর্ভোগের কারণ না হয়— সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আচরণ, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।

১০. এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের রাজনৈতিক তাৎপর্য কী?

#অনেকের মতে, এই প্রত্যাবর্তন বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে জনগণের ঐক্য গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবেও তারেক রহমানের ফেরাকে দেখা হচ্ছে।