নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত সামছুদ্দিন (৫৫) নামের আরেক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ছয় জনে দাঁড়িয়েছে। সামছু বাহিনীর প্রধান ছিলেন সামছুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চরের জঙ্গল থেকে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গত মঙ্গলবার হাতিয়া উপজেলার জাগলার চরের দখল নিয়ে সংঘর্ষের পর পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
সামছুদ্দিন হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। নিহত অন্যরা হলেন— আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন, মোবারক হোসেন, আবুল কাশেম, হক সাব ও কামাল উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশকিছু জমি ভূমিহীনদের কাছে বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরো বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা সামছু বানিহীকে চর থেকে বিতাড়িত করে জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়। মঙ্গলবার চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। গুলিতে দুই গ্রুপের ৬ জন নিহত হন। বুধবার রাতে ৫ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত সামছুদ্দিনের ছোট ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, ১০-১২ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। সামছুদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।