সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে বেশ চনমনে ঢাকা ক্যাপিটালস শিবির। আগের বছর শিরোপা জেতা হয়নি। এবার নতুন মৌসুম। নতুন করে দল সাজানো। নতুন করে সব শুরু। উজ্জিবীত দল অপেক্ষায় ছিল ভালো একটা সূচনার। কিন্তু হঠাৎ ঢাকা শিবিরে নৈঃশব্দ্য।
রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও ঢাকা ক্যাপিটালসের ক্রিকেটাররা মাঠের দুই প্রান্তে ওয়ার্ম আপ করছিলেন। এর মধ্যেই মাঠে লুটিয়ে পড়েন ঢাকা ক্যাপিটালসের সহকারী কোচ মাহবুব আলী জ্যাকি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সিপিআর দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়। একটু পর জানা যায়, জ্যাকি আর নেই!
খেলার মাঝেই তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে যায়। তার আগে ঢাকা ক্যাপিটালস টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামে। কোচ হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বোলিংয়ে দুর্দান্ত করে ঢাকা। আগের দিন সিলেটের দেওয়া ১৯০ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে রাজশাহী। আজ আগে ব্যাটিং করে রাজশাহী ৮ উইকেটে ১৩২ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাব দিতে নেমে ঢাকা ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেটে, ৭ বল হাতে রেখে।
সহজ টার্গেট কঠিন করে জিতেছে ঢাকা। যদিও উইকেটে ব্যাট করা সহজ ছিল না। সাইফ হাসান ১ রান করে তানজিম হাসানের বলে বোল্ড হন। আরেক ওপেনার উসমান খান ১৮ রানের বেশি করতে পারেননি। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের ইনিংস থেমে যায় ১২ রানে।
হাল ধরেছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। ফিফটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ৩৯ বলে ৪৫ রান করে সীমানায় আটকে যান। নাসিরও তাই। ২২ বলে ১৯ রান করে ধরা পড়েন লং অফে। সেখান থেকে ঢাকাকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সাব্বির ও শামীম। দুজন ১৮ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন চোখের পলকে। সাব্বির ১০ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন। শামীম ১৩ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ঢাকার বোলিংয়ে হাল ধরেন স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। নিজের প্রথম বলে পেয়ে যান উইকেটের স্বাদ। লেগ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগাতে পারেননি শাহিবজাদা ফারহান। উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ মিঠুন বল ধরে স্টাম্প ভাঙেন চোখের পলকে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত (৩৭) ও ইয়াসির আলীর (১৩) উইকেট নেন তিনি। ৪ ওভারে ১৬ রানের খরচে তার শিকার ৩ উইকেট।
ভালো করতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। ২৩ বলে ২ চারে ২৪ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। শুরু ও মিডল অর্ডারে ভালো ফল না আসায় বড় সংগ্রহের সুযোগ নষ্ট হয়ে যায় আগেই।
শেষে তাদের ভরসা হয়ে ছিল কেবল মোহাম্মদ নওয়াজ। মারকুটে ব্যাটার পরিস্থিতি অনুযায়ী দলের দাবি মিটিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি। ২ বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ঢাকার হয়ে ইমাদ বাদে ২টি উইকেট নেন নাসির হোসেন। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন সালমান মির্জা, জিয়াউর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা হন ইমাদ ওয়াসিম।