পজিটিভ বাংলাদেশ

প্লাস্টিকের বিকল্প কাগজের কলমে ফলদ গাছের চারা

প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশবান্ধব কাগজের কলম তৈরি করে আলোচনায় এসেছেন আমতলী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ আমিরুল ইসলাম। এই কলম ব্যবহার শেষে মাটিতে ফেললেই জন্ম নেয় ফলদ গাছের চারা।

আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের মোঃ মনিরুল ইসলামের ছেলে আমিরুল ইসলাম ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু উদ্ভাবনে আগ্রহী। এসএসসি পরীক্ষার্থী থাকাকালীন এ উদ্যোগের কাজ শুরু করলেও পরীক্ষার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পুনরায় কাজ শুরু করে টানা ২ মাস চেষ্টার পর গত নভেম্বর মাসে তিনি সফল হন।

এই পরিবেশবান্ধব কলম তৈরিতে বিভিন্ন রঙের কাগজে কালির শীষ পেঁচিয়ে আটা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। এরপর কাগজের ভেতরে বিভিন্ন ফলদ গাছের বীজ রাখা হয়। শুকিয়ে শক্ত করার পর কলমটি ব্যবহারযোগ্য হয়। কলমের কালি শেষ হলে মাটিতে ফেললেই সেখান থেকে গাছের চারা জন্ম নেয়।

আমিরুল জানান, “৫ থেকে ১০ টাকা খরচে তৈরি এসব কলম বিক্রি হচ্ছে ৫ ও ১০ টাকায়। তার লক্ষ্য ৫ টাকার ব্যয়ে হাজার টাকার আয়ের পথ তৈরি করা এবং একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা করা। বাজারে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কলম পরিবেশের ক্ষতি করলেও এই কলম পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

বর্তমানে আমতলী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কলমের ব্যবহার বাড়ছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ হান্নান বলেন, “পরীক্ষামূলকভাবে এই কলম ব্যবহার করে ফলদ গাছ জন্মাতে দেখা গেছে। তাই শিক্ষার্থীদের এই কলম ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।”

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) অনিমেষ বালা বলেন, “উদ্যোগটি যাচাই করে দেখা হবে। ফলপ্রসূ হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।”

আমিরুলের বাবা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, “লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় তার ছেলের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”

সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে এই কলম সারা দেশে বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আমিরুল।